সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণায় সাম্প্রতিক সাইবার হামলার পেছনে ইরান জড়িত ছিল বলে নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। সোমবার এফবিআই ও অপর কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো যৌথ এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছে ইরান। এর লক্ষ্য ছিল বিভাজন উসকে দেওয়া এবং আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা দুর্বল করা। খবর, বিবিসির। ট্রাম্পের প্রচারণা শিবির ১০ আগস্ট ইরানের দিকে আঙুল তোলে এবং দাবি করে যে তাদের অভ্যন্তরীণ বার্তাগুলো হ্যাক করা হয়েছে। তবে, ইরানি কর্মকর্তারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজের সঙ্গে যুক্ত সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইরানি হ্যাকাররা ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিসের প্রচারণা শিবিরকেও টার্গেট করেছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বিবৃতিতে বলেছেন, গোয়েন্দা সম্প্রদায় আত্মবিশ্বাসী যে ইরানিরা সামাজিক কৌশল এবং অন্যান্য প্রচেষ্টার মাধ্যমে উভয় রাজনৈতিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রচারণার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছে। তারা আরও জানায়, এ ধরনের কার্যকলাপ, যার মধ্যে তথ্য চুরি এবং প্রকাশ রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার উদ্দেশে পরিচালিত। ট্রাম্পের প্রচারণায় একটি স্পিয়ার-ফিশিং ইমেইল পাঠানো হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে। বিশ্বাসযোগ্য মনে করে টার্গেটকে ক্ষতিকর লিংকে ক্লিক করানোর উদ্দেশে এমনটি করা হয়েছিল। হ্যারিসের প্রচারণা দলও একই ধরনের আক্রমণের শিকার হয়েছে, তবে তা ব্যর্থ হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে। সোমবারের বিবৃতিতে এফবিআই, ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স অফিস এবং সাইবার সিকিউরিটি ও ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সির মতো সংস্থাগুলো উল্লেখ করেছে, এই কৌশলগুলো নতুন নয়। এর আগে রাশিয়া ও ইরান পূর্বের মার্কিন নির্বাচনে এই ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করেছে। হ্যাকের সময় কোনো তথ্য চুরি হয়েছে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। ট্রাম্প বলেছেন, হ্যাকাররা শুধু পাবলিক ডোমেইনে থাকা তথ্যই পেতে পেরেছিল। তবে, নিউইয়র্ক টাইমস, পলিটিকো এবং ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, তাদের কাছে ট্রাম্পের প্রচারণা থেকে কিছু গোপনীয় তথ্য ফাঁস করা হয়েছে, যার মধ্যে তার রানিং মেট জেডি ভ্যান্সের ভেটিং সম্পর্কিত তথ্যও রয়েছে। তবে এই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত জানাতে সংবাদমাধ্যমগুলো এখন পর্যন্ত বিরত রয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরান এমন একটি নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে চায়, যা তাদের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আরও জানিয়েছে, তারা এই নির্বাচনি চক্রে ইরানের ক্রমবর্ধমান আক্রমণাত্মক কার্যকলাপ লক্ষ্য করেছে। ইরানি হ্যাকারদের ক্রমবর্ধমান হুমকির বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। সম্প্রতি, মাইক্রোসফট জানিয়েছে যে তারা ইরানের সঙ্গে সম্পর্কিত গ্রুপগুলোর ‘উল্লেখযোগ্য প্রভাবশালী কার্যকলাপের’ উদ্ভব লক্ষ্য করেছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রচারণা দল এবং ট্রাম্পের প্রচারণাও ইরানি হ্যাকারদের দ্বারা টার্গেট হয়েছিল বলে গুগল জানিয়েছে।