ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, আমরা প্রত্যাশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার তাদের সংস্কার কার্যক্রমের ধরন ও প্রক্রিয়া কী হবে এবং কতদিনের মধ্যে সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করবে, তা অতিদ্রুত প্রকাশ করবে এবং জাতীয় নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করবে। গতকাল পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ইসলামী আন্দোলন আয়োজিত ‘ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার সরকারের পতন পরবর্তী দেশের চলমান পরিস্থিতি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, স্বৈরশাসনের অবসান হয়েছে। এখন সময় সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক বাংলাদেশ নির্মাণের। তিনি বলেন, গ্রহণযোগ্য তদন্ত কমিশন ও স্বতন্ত্র ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জুলাই গণহত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। একই সঙ্গে গত ১৬ বছরে সংঘটিত সব রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হত্যাযজ্ঞ, গণহত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করতে হবে। দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সব সম্পত্তি ক্রোক করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে এবং বিদেশে পাচার করা টাকা ফেরত আনার ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সব দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ প্রজাতন্ত্রের যে সব কর্মচারী আইন, সংবিধান, শপথ লঙ্ঘন করে অপেশাদার আচরণ করেছেন তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর চিন্তা-চেতনা ও অনুভূতির বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে এবং অবাধ, সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু করতে হবে। আওয়ামী দুঃশাসনের বিগত ১৬ বছরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এদেশের সাধারণ শিক্ষা খাতের মান ও নৈতিকতা। এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে দেশপ্রেমিক শিক্ষাবিদ ও উলামায়ে কেরামের সমন্বয়ে একটি জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠন করে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। গ্রামপুলিশকে জাতীয়করণ করতে হবে। এ আন্দোলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও সহযোগী সংগঠনের সক্রিয় অবস্থান ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে তাদের দলের মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ১৮ জন। আহত হয়েছেন শতাধিক। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ২১ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম।