প্রায় সোয়া কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) এস এম কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সংস্থাটির খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম মামলাটি করেন।
জানা যায়, এস এম কামরুজ্জামান খুলনা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অনুসন্ধান শেষে ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর কামরুজ্জামানের নামে সম্পদ বিবরণী জারি করা হলে ওই বছরের ১৮ ডিসেম্বর তিনি সম্পদের হিসাব দাখিল করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি তার সম্পদ বিবরণীতে ২ কোটি ৯০ লাখ ২১ হাজার টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। কিন্তু রেকর্ডপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ১৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার সম্পদের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য গোপনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এ ছাড়া দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়- তিনি ১ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার ৫৮২ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছেন। সম্পদ বিবরণীতে তিনি ১ কোটি ৮৭ লাখ ৭২ হাজার ১৪৯ টাকার স্থাবর এবং ১ কোটি ২ লাখ ৪৯ হাজার ৬৯৭ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ সর্বমোট ২ কোটি ৯০ লাখ ২১ হাজার ৮৪৬ টাকার সম্পদ প্রদর্শন করেন। অথচ কামরুজ্জামানের নামে ২ কোটি ৭ লাখ ১২ হাজার ১৪৯ টাকার স্থাবর এবং ১ কোটি ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬৯৭ টাকার অস্থাবরসহ সর্বমোট ৩ কোটি ৯ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৬ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়। স্থাবর কিংবা অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
দুদক সূত্র বলছে, যে সময়ে কামরুজ্জামানের ৩ কোটি ৯ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৬ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়, ওই সময়ে তার ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ফাইন্যান্স করপোরেশন ও রূপালী ব্যাংকে ৪৫ লাখ টাকার দায় ছিল। সুতরাং দায় বাদে তার নিট সম্পদের মূল্য ২ কোটি ৬৪ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৬ টাকা। তার অতীত জীবনের সঞ্চয়, বেতন-ভাতার আয়, বাড়ি ভাড়ার আয়, মাইক্রোবাস ভাড়া হতে আয়, সঞ্চয়পত্রের সুদ প্রাপ্তি ও জমি বিক্রি বাবদ মূলধনী আয় হতে মোট গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ ২ কোটি ২৪ লাখ ৮১ হাজার ৭১৮ টাকা। তিনি পারিবারিক ব্যয় ও ঋণ পরিশোধ বাবদ ৬২ লাখ ৩২ হাজার ৪৫৪ টাকা ব্যয় করেন। তার নিট আয় কিংবা সঞ্চয়ের পরিমাণ ১ কোটি ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ২৬৪ টাকা। ফলে আসামি এস এম কামরুজ্জামানের জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার ৫৮২ টাকা।