আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে এবার ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এর মধ্যে আগে থাকবে দুই দিন। এই সময়ের মধ্যে বাড়ি যাবে মানুষ। এতে পরিবহন ও সড়কের ওপর চাপ পড়বে। সড়ক ও মহাসড়কের পাশে বসবে ২১৭ অস্থায়ী পশুর হাট। এ ছাড়া ১৫৯ স্থান যানজটপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এসব কারণে যানজট ও দুর্ভোগের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পরের ছুটি থেকে দুই দিন কেটে ঈদের আগে নিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। গত সোমবার বিদ্যুৎ ভবনে সড়ক, সেতু ও রেলপথে যাত্রীদের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে অংশীজনদের নিয়ে সভা হয়। সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। সভায় বলা হয়, ঈদের ছুটি শুরু হবে আগামী ৫ জুন। ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ৭ জুন। দুই দিন আগে থেকে যাত্রা শুরু হবে। এতে পরিবহন ও সড়কের ওপর চাপ পড়বে। তবে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় যানজট ও দুর্ভোগের শঙ্কা রয়েছে। ঈদ যদি ৭ জুন হয়, তাহলে ঈদের আগে বন্ধ থাকছে দুই দিন অর্থাৎ বৃহস্পতি ও শুক্রবার। এই দুই দিনে দেড় কোটি মানুষের বাড়ি ফেরা অসম্ভব। তিনি বলেন, ঈদের পরে এত দিন ছুটি প্রয়োজন নেই। যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে হলে পরের ছুটি থেকে দুই দিন কেটে ঈদের আগে নিয়ে আসেন। তাহলে মানুষ নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবে। মোজাম্মেল হক বলেন, সড়কের পাশে কোরবানির হাট না বসাতে অনুরোধ করা হয়েছে। কারণ, এসব যানজট তৈরি করে।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) তথ্যানুযায়ী, ঈদুল আজহার সময় দেশের মহাসড়কের পাশে প্রায় ২১৭টি স্থানে অস্থায়ী কুরবানির পশুর হাট বসবে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হাট বসে চট্টগ্রাম জেলায়। এতে সড়কে যানবাহনের গতি কমে যায় এবং সৃষ্টি হয় যানজট। এই পরিস্থিতি এড়াতে মহাসড়কের ওপর বা পাশে হাট ইজারা না দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সড়ক ও মহাসড়কের ১৫৯টি স্থানকে সম্ভাব্য যানজটপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্পট রয়েছে ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কে। এসব স্থানে কার্যকর মনিটরিং নিশ্চিত করতে হাইওয়ে পুলিশ, জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মনিটরিং টিম গঠন করে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব স্পটে ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালনা করা হবে।
সভায় বিআরটিএর চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন বলেন, এবারের কুরবানির ঈদে মহাসড়কের ওপর বা তার আশপাশে কোনো পশুর হাট বসানো হবে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। জাতীয় মহাসড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ করিডরগুলোর মধ্যে ঢাকা বাইপাস, নবীনগর-চন্দ্রা, ঢাকা-জয়দেবপুর-ময়মনসিংহসহ সংস্কারযোগ্য সড়কগুলোর মেরামত ও সংস্কার কাজ ঈদের সাত দিন আগেই শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টোলপ্লাজায় সার্বক্ষণিক ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ইটিসি) বুথ চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।