২২ নভেম্বর, ২০২১ ১৪:২৫

উইমেন এশিয়া-প্যাসিফিক ডব্লিউইপি’স অ্যাওয়ার্ড জিতল ‘মনের বন্ধু’

অনলাইন ডেস্ক

উইমেন এশিয়া-প্যাসিফিক ডব্লিউইপি’স অ্যাওয়ার্ড জিতল ‘মনের বন্ধু’

তৌহিদা শিরোপা

প্রথমবারের মতো ইয়ুথ লিডারশিপ বিভাগে ইউএন উইমেনের এশিয়া প্যাসিফিক ডব্লিউইপি অ্যাওয়ার্ড (২০২১) জিতে ইতিহাস গড়লো দেশের সবচেয়ে বড় মানসিক স্বাস্থ্য সেবার প্ল্যাটফর্ম মনের বন্ধু। বাধা পেরোনোর দক্ষতা, উদ্ভাবন ও লিঙ্গ সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধানে দৃঢ় ভূমিকা রাখায় ইয়ুথ লিডারশিপ বিভাগে এসেছে এই পুরস্কার। প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নারী। কর্মীদের মধ্যেও নারীর সংখ্যা বেশি। বিশ্বের ২০টি দেশের ৭০০ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে বাংলাদেশি স্টার্টআপ মনের বন্ধু পুরস্কারটি জিতেছে। ব্যবসায় নারীবান্ধব সংস্কৃতির প্রচলন ও নারী ক্ষমতায়নের উল্লেখযোগ্য নজির স্থাপনের কারণে, বিশেষ করে মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় পেশাগত দায়িত্বে লিঙ্গ নিরপেক্ষ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করায় মনের বন্ধু পেয়েছে এই সম্মানজনক স্বীকৃতি।

গত ১৮ নভেম্বের ভার্চুয়াল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ইউএন উইমেন এশিয়া–প্যাসিফিক ডব্লিউইপি’স অ্যাওয়ার্ড (২০২১) গ্রহণ করেন তরুণ উদ্যোক্তা, মনের বন্ধুর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদা শিরোপা। প্রতি বছর উইমেন’স এমপাওয়ারমেন্ট প্রিন্সিপালস (ডব্লিউইপি’স)–এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ও কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতার প্রচলনকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ইউএন উইমেন এশিয়া প্যাসিফিক ডব্লিউইপি’স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা করে ইউএন উইমেন। বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান এবারই প্রথম কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করার স্বীকৃতি হিসেবে এই সম্মানজনক পুরস্কারটি অর্জন করলো। 

তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে মনের বন্ধুর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও সব সময় মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকে সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করে তোলার মধ্য দিয়ে দেশের হাজারো নারী সুবিধাভোগীর জন্য মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করেছেন এবং নিজের প্রতিষ্ঠানেও নারী কর্মীদের জন্য একটি সুস্থ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করেছেন। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতেও এই লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তৌহিদা শিরোপা নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি সমতায় বিশ্বাসী। আমার কাছে সমতার মানে হলো সমাজে ছাপ রাখার মতো ব্যবসায়িক চর্চা। একজন তরুণ উদ্যোক্তা ও নেতা হিসেবে আমি বরাবরই চেষ্টা করে যাচ্ছি বিভিন্ন প্রজন্মের অভিজ্ঞদের সঙ্গে তরুণদের যুক্ত করে লিঙ্গ সমতাকে আরও বেশি কার্যকরী করতে এবং এই চর্চাকে ছড়িয়ে দিতে। আমাদের সেবা থেকে শুরু করে সচেতনামূলক কার্যক্রমে, আমাদের সেবাগ্রহীতা থেকে কর্মীদের মধ্যে— সবখানে সব পরিস্থিতিতে আমরা লিঙ্গসমতাকে প্রাধান্য দিয়ে আসছি। আর এই চর্চার প্রতিফলনই হলো এবারের পুরস্কার। এটা শুধু মনের বন্ধুর অর্জন নয়, এই অর্জন বাংলাদেশেরও। এই পুরস্কার বিশ্বকে দেখিয়ে দেবে কীভাবে বাংলাদেশের একটি তরুণ প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়, কর্মক্ষেত্রে ও সেবায় লিঙ্গসমতার চর্চা করে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশের গৌরবের কারণ হতে পেরে আমরা ভীষণ আনন্দিত। আমাদের কাজের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ লিঙ্গসমতা চর্চার অগ্রদূত হতে পেরেছে এটা আনন্দের ব্যাপার।’ 

মানসিক সুস্থতা ও স্বাস্থ্যসেবার প্ল্যাটফর্ম মনের বন্ধু ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে। টেকসই লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশের সব নাগরিকের জন্য সহজ ও সাশ্রয়ী মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয় এই প্ল্যাটফর্মে। অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ মনোবিদ (সাইকো সোশাল এক্সপার্ট) ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে এই প্ল্যাটফর্ম ৩১ হাজার মানুষকে সরাসরি ও অনলাইন কাউন্সেলিং সেবা দিয়েছে। এর পাশাপাশি গত ৫ বছরে বিভিন্ন কর্মশালা, প্রশিক্ষণ ও সচেতনামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে ১২ লাখ মানুষকে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা খাতের সঙ্গে যুক্ত করেছে, সেই সঙ্গে অনলাইনে প্রাথমিক সেবা দিয়েছে ৪০ লাখ মানুষকে। 

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর