পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ রয়েছে যেখানে মানুষ জনসমক্ষে নগ্ন হতে বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করেন না। তাদের পাবলিক গোসলখানাতে চোখ দিলেই এ কথার সত্যতা পাওয়া যায়। কোরিয়ান বা জাপানিজ বাথ হাউজগুলোর সনা উপভোগ করতে যান অনেক মানুষ। কারণ সেখানে সবার সামনেই হরহামেশাই নগ্ন হন তারা। কিন্তু এসব স্থানে জনসম্মুক্ষে নগ্ন হওয়ার ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে রয়েছে জার্মানরা।
নগ্ন হওয়ার ক্ষেত্রে জার্মানদের বেশ কিছু আয়েশী ঢং রয়েছে। ১৯শো শতকের দিকে স্ক্যান্ডনেভিয়ানদের মতো স্টিম বাথকে জার্মানরা স্বাস্থ্যের যত্নে গ্রহণ করে নেয়। তখন থেকেই পাবলিক গোসলখানায় মানুষের আনাগোনা বাড়ে এবং তারা সহজেই নগ্ন হওয়ার চর্চা চালিয়ে যান। ধুধু তাই নয় জার্মানের এসব গোসলখানার ইন্টেরিয়র দারুণ আকর্ষণীয় রূপে গোরে তোলা হয়েছে। যেন শত শত বছর আগের কোনো রাজসীক গোসলখানায় গোসল করছেন সবাই।
হামবুর্গের সবচেয়ে পুরনো পাবলিক গোসখানার একটি ১৮৯৫ সালের কাইফু-বাড। একসময় তাতে নারী-পুরুষের জন্য স্থান পৃথক করা ছিল। এখন পুরুষদের অংশে পুল বানানো হয়েছে যার চারদিকে পিলার বসানো। পুরনো আমলের জানালা গলে এখানে সূর্যের আলো প্রবেশ করে। পুলের নিচে গিয়েও মনমুগ্ধকর সঙ্গীত কানে আসে। এই অংশে মানুষ দেহে তোয়ালে জড়িয়ে থাকেন।
মিউনিখের পুরনো শহরের মিলার'সাচেস ভল্কসবাদ এক আকর্ষণীয় ভবন। ভেতরটা ১৯০১ সালের ইন্টেরিয়রে নজরকাড়া পরিবেশ। এর নকশা প্রকৃতিকে মাথায় রেখে করা হয়েছে। এমনকি ছোট-ছোট কেবিনেও অপূর্ব ইন্টেরিয়র করা হয়েছে। এখানে মিলবে একটি বড় কক্ষ। সেকানে ডিম লাইটে শান্ত পরিবেশ। গোটা কক্ষে আড়াআড়িভাবে বাষ্প বেরোচ্ছে। সেখানে অবস্থানরত নগ্ন মানুষগুলো অনেকেই হেঁটে চলে যাচ্ছেন যে যার মত।
কোলনে মিলবে সবচেয়ে সুন্দর পাবলিক গোসলখানা। এটা রোম সাম্রাজ্যের একটি অংশ। কোলনস নেপচুপবাদ খুলেছিল ১৯১২ সালে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ যখন জার্মানির সাম্রাজ্য মুছে দিয়েছিল, তখন এটি চালু হয়। টাইলস আরো মোজাইকে সজ্জিত এক ভবন। এর অন্য এক অংশে রয়েছে ব্যায়ামাগার। সেখানে রয়েছে রোমানদের ঐতিহাসিক স্টিম রুম এবং প্লাঞ্জ পুল।
এসব গোসলখানার মাধ্যমে জার্মানিরা মানুষের সামনে নগ্ন হওয়ার এক আয়েশী ও উপভোগ্য পন্থা বের করেছে। এখানে বসে যে কেউ নাকি অনুভব করবেন, আমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী নগ্ন মানুষ।
বিডি-প্রতিদিন/২৩ নভেম্বর, ২০১৬/তাফসীর-২০