বলবিন্দর সিংহ পেশায় একজন সাধারণ ট্যাক্সি চালক। ভারতের পাঞ্জাবের পাতিয়ালায়ে তার বসবাস। স্টেট ব্যাংক অফ পাতিয়ালায় তাঁর একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। কিছু দিন আগে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান বলবিন্দর, যখন তার মোবাইলে এসএমএস আসে এই মর্মে যে, তার এই জন ধন অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে ৯৮০০ কোটি টাকা। বিষয়টি নিছকই ভুল বলে ধরে নিয়ে ব্যাংকে নিজের পাস বই নিয়ে যান বলবিন্দর। পাস বই আপডেটের পরে দেখা যায় পাস বইতে অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স লেখা রয়েছে ৯৮,০৫,৯৫,১২,২৩১ টাকা।
বিষয়টির কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছিলেন না বলবিন্দর। তার বিস্ময়ের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পায় যখন ওই বিপুল টাকা জমা হওয়ার পরের দিনই আবার অ্যাকাউন্ট থেকে ৯৮০০ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার এসএমএস আসে বলবিন্দরের মোবাইলে। ব্যাংকে গিয়ে পাস বই আপডেটের পরে এসএমএস-এর সমর্থন মেলে।
গোটা ঘটনাটাই একেবারে হতবাক করে দেয় নিরীহ ট্যাক্সিচালককে। কারণ বলবিন্দর ৩০০০ টাকা দিয়ে ওই অ্যাকাউন্ট খুলে ছিলেন। পরে আরও ২০০ টাকা তিনি জমা করেন। সুতরাং তার অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স হওয়ার কথা ৩২০০ টাকা। সেই জায়গায় ৯৮০০ কোটি টাকা কীভাবে আসতে পারে, তা ভেবে কোন কূলকিনারা পাচ্ছিলেন না বলবিন্দর। পরের দিনই কীভাবে আবার সেই টাকা উধাও হয়ে যেতে পারে, সেই প্রশ্নেরও কোন উত্তর পাচ্ছিলেন না তিনি।
আতঙ্কিত বিভ্রান্ত বলবিন্দর নিজের প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে ছোটাছুটি শুরু করেন ব্যাংকে। প্রাথমিকভাবে ঘটনার কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেননি ব্যাংক কর্মীরাও। পরে ব্যাংকে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের যাতায়াত শুরু হওয়ায় নড়েচড়ে বসে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। খোদ ব্যাংকের ম্যানেজার সন্দীপ গর্গ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেন। তখনই সামনে আসে আসল ঘটনা।
সন্দীপ জানান, বলবিন্দরের অ্যাকাউন্টে যা কিছু ঘটেছে, সবটাই হয়েছে ভুলবশত। আসলে বলবিন্দর যখন ২০০ টাকা জমা করেন তার অ্যাকাউন্টে, তখন অ্যাকাউন্ট আপডেট করতে গিয়ে ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার ভুলবশত ১১ ডিজিটের ইন্টারন্যাল ব্যাংকিং জেনারেল লেজার অ্যাকাউন্ট নম্বরটি লিখে ফেলেন। সেটাই হয়ে যায় বলবিন্দরের নতুন অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স। সেই মতো এসএমএস-ও চলে যায় বলবিন্দরের মোবাইলে। পাস বইতেও ওই সংখ্যাটাই ছাপা হয়ে যায়।
পুলিশের ডেপুটি কমিশনার ভুপিন্দর সিংহ ব্যাংকের এই ব্যাখ্যাকে সত্য বলে ঘোষণা করেছেন। পুরো বিষয়টি জানার পরে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন বলবিন্দরও। নিজের অ্যাকাউন্টে নিজের টাকা নিয়েই তিনি খুশি।
বিডি প্রতিদিন/২৯ নভেম্বর ২০১৬/হিমেল