বয়স বেড়ে যাওয়া হাতে নেই তার। তবে চাইলে ‘বৃদ্ধ’ হওয়া তিনি আটকাতেই পারেন। ৮৫ বছরের হ্যাটির রেট্রোএজ জীবন দর্শন অন্তত তা-ই। আর এই জীবন দর্শনকে তিনি ‘হ্যাটিটিউড’ বলতে ভালবাসেন।
সেই হ্যাটিটিউডেই এত দিন ৩৯ বছর বয়সি এক প্রেমিকের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করেছেন। তবে সেই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় এখন নতুন প্রেমিকের সন্ধান করছেন হ্যাটি। শর্ত একটাই— নতুন বয়ফ্রেন্ডের বয়স ৩৫ বছরের কম হতে হবে।
বয়ফ্রেন্ড খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি বেশ গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন হ্যাটি। বিভিন্ন ডেটিং অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। বিবরণে লিখেছেন, ‘আমি এখন একা, এই মুহূর্তে কোনও সম্পর্কে নেই। তবে আনন্দ পেতে চাইছি। আনন্দের সন্ধানে আছি।’
এই আনন্দের খোঁজ তার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা অ্যাপে নিজের পরিচয়ের কলামে বুঝিয়ে দিয়েছেন হ্যাটি। নিজেই নিজেকে ‘আবেদনময়ী নারী’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
হ্যাটি পেশাদার মডেল। তার বাড়ি নিউইয়র্কে। ফ্যাশন দুনিয়া তার মতো বয়স্ক মডেলদের সিনিয়র মডেল বলে। হ্যাটি কমবয়সিদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্যামেরার সামনে পোজ দেন। মাঝে মধ্যেই তার ফটোশ্যুট চলে। শ্যুটিংয়ের সেই সব ছবি নেটমাধ্যমে ভাগ করে নেন হ্যাটি।
এই বয়সেও ফিটনেসে অনেককে টেক্কা দিতে পারেন। হাঁটা চলা সুঠাম, ৮৫-তেও ন্যুব্জতা আসেনি। মেশিনের সাহায্য নিয়ে হলেও এখনও শীর্ষাসন করতে পারেন। নিয়মিত যোগচর্চাও করেন। ফ্যাশন দুনিয়ার কমবয়সি সহকর্মীরা তাকে ডাকেন ‘গ্ল্যাম গ্র্যান’ বলে। যার অর্থ সুন্দরী দাদি।
৪৮ বছর বয়সে বিবাহবিচ্ছেদ হয় হ্যাটির। তারপর থেকেই নিয়মিত ডেটিং করছেন। তবে হ্যাটি জানিয়েছেন, বরাবরই কম বয়সি পুরুষদের ডেট করেছেন তিনি।
তার আগের প্রেমিকের বয়স ছিল ৩৯। তার সঙ্গে হ্যাটির সম্পর্ক কিছুটা দীর্ঘ হয়েছিল। সেই সম্পর্কে সম্প্রতি ছেদ পড়েছে। এখন তাই নতুন প্রেমের খোঁজ করছেন হ্যাটি।
নিজের চাহিদা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেন হ্যাটি। তিনি বলেছেন, “এ যুগে ডেটিং মানে ঘনিষ্ঠ হওয়া, কাছে আসা। তারপর আবার যে যার নিজের পথ ধরা।”
ডেটিংয়ের এই নতুন ধারায় অবশ্য কোনও আপত্তি নেই তার। বরং হ্যাটি যথেষ্ট হ্যাটিটিউড নিয়েই জানিয়েছেন, তিনি একান্তে অন্তরঙ্গ হতেই চান।
বরাবরই রোম্যান্টিক তিনি। বারবার প্রেমে পড়েছেন। প্রেম ভেঙেছেও বারবার। তবু প্রেমে পড়তে ভয় পান না। বরং এই বয়সেও সে অভ্যাস পুরোমাত্রায় বজায় আছে।
ডেটিং অ্যাপে হ্যাটি স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন নিজের চাহিদার কথা। লিখেছেন, ৩৫ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সী প্রেমিক চাই তার। যাকে তিনি নিজের মতো করে ভালবাসতে চান। প্রেমে পড়তে মরিয়া হ্যাটি নাকি একবার কাগজেও প্রেমিক চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন।
হ্যাটির আবেদনে সাড়াও দিয়েছেন অনেকে। কিছু দিন আগেই অ্যাপে তার ছবি দেখে ইসরায়েলের এক যুবক যোগাযোগ করেছিলেন তার সঙ্গে। হ্যাটিকে তিনি বলেছেন, ৮৫-র এই ‘তরুণী’র সবকিছুই বেশ মিষ্টি লাগে তার।
দুই মেয়ের মা হ্যাটি। তিন নাতি-নাতনিও আছে। তবে হ্যাটির জীবনযাত্রা নিয়ে কোনওদিনই আপত্তি তোলেননি তারা। বরং মেয়েরা মাকে বরাবর সমর্থন করে এসেছেন। কারণ তাদের কাছে হ্যাটির ভাল থাকাটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
হ্যাটি নিজেও নিজের জীবনযাত্রা নিয়ে বিন্দুমাত্র লজ্জিত নন। তার কথায়, “যারা আমার এই জীবনযাত্রাকে কুরুচিপূর্ণ বলে মনে করেন তাদের আমার প্রশ্ন, আমি প্রেমের প্রস্তাব না দিয়ে যদি এরা আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিত তবে কি তাদের চোখে ব্যাপারটা বেশি রুচিশীল মনে হত?”
ফ্যাশন পত্রিকা ভোগ-এর হয়ে মডেলিং করেছেন হ্যাটি। সিনিয়র মডেল হিসেবে তার প্রশংসাও করেছেন বহু আন্তর্জাতিক আলোকচিত্রী। ভোগ-এর প্রচ্ছদে হ্যাটির সোনালি স্নান পোশাকের ছবিও ফ্যাশন দুনিয়ায় সাহসী বলে প্রশংসিতও হয়েছিল।
হ্যাটি জানিয়েছেন, ভোগ-এর জন্য মডেলিংয়ের ব্যাপারটা হঠাৎ করেই হয়ে যায়। ভোগ–এর এক ডিজাইনার তার স্নান পোশাকের জন্য মডেল খুঁজছিলেন। ঘটনাচক্রে ওই দিন ভোগ-এর ফ্যাশন হাউসের সামনে শ্যুটিং করছিলেন হ্যাটি তাকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় ডিজাইনারের। সূত্র: আনন্দবাজার
বিডি প্রতিদিন/কালাম