অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রতীরে পাওয়া এক পথভ্রষ্ট সম্রাট পেঙ্গুইন দীর্ঘ ২০ দিন পর অবশেষে নিজের আবাস অ্যান্টার্কটিকায় ফিরে গেছে। এই পেঙ্গুইনটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘গাস’। সমুদ্রের প্রবল স্রোতে দিক হারিয়ে প্রায় ২,০০০ মাইল ভ্রমণ করে এটি অস্ট্রেলিয়ার ওশান বিচে পৌঁছায়। ১ নভেম্বর স্থানীয় সার্ফাররা তাকে প্রথম দেখতে পান। ক্লান্ত, কিন্তু বেঁচে থাকা গাস আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করে।
গাসকে উদ্ধার করে স্থানীয় বন্যপ্রাণী রক্ষাকারী ক্যারল বিদলফ তাকে সুস্থ করে তোলেন। অ্যান্টার্কটিকার এই পেঙ্গুইন যখন উদ্ধার করা হয়, তখন তার ওজন ছিল মাত্র ৪৭ পাউন্ড। সাধারণত এই প্রজাতির পেঙ্গুনের ওজন হয় প্রায় ৮৮ পাউন্ড। বিদলফ বলেন, শুরুতে আমি ভেবেছিলাম সে হয়তো বাঁচবে না। তবে গাসের দেখভাল করা আমার জীবনের অসাধারণ অভিজ্ঞতা। তাকে মিস করব।
বিদলফের যত্নে গাসের স্বাস্থ্য ধীরে ধীরে ফিরে আসে। তাকে প্রতিদিন তিনবার ২০টি করে পিলচার্ড মাছ খাওয়ানো হতো। একপর্যায়ে তার ওজন বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫ পাউন্ড।
২১ নভেম্বর গাসকে দক্ষিণ মহাসাগরের একটি অজ্ঞাত স্থানে ছেড়ে দেওয়া হয়। একটি বরফ প্যাকসহ বায়ুচলনীয় পোষা প্রাণীর বাক্সে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। মুক্তির মুহূর্তে গাস পানিতে লাফ দিয়ে দ্রুত সাঁতরে চলে যায়। ক্যারল বিদলফ বলেন, সে যেন ঠিক জানত তাকে কোথায় যেতে হবে। পেছনে তাকায়নি, একবারেই জলে মিলিয়ে গেল। সত্যিই অবিশ্বাস্য।
গাস কীভাবে এত দূরে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছাল, তা এখনো পরিষ্কার নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, খাদ্যের সন্ধানে সমুদ্রের স্রোতে ভেসে সে দিক হারিয়ে ফেলেছিল। কেউ কেউ বলছেন, পরিবেশগত পরিবর্তনের ফলে অ্যান্টার্কটিকায় খাদ্য ও সম্পদের সংকট গাসকে এই দীর্ঘ যাত্রায় বাধ্য করেছিল।
পেঙ্গুইন প্রাকৃতিকভাবেই কৌতূহলী এবং ঘোরাঘুরিতে অভ্যস্ত, তবে গাসের মতো এতদূর ভ্রমণের ঘটনা নজিরবিহীন। তার এই অদ্ভুত ভ্রমণ প্রকৃতির বৈচিত্র্য এবং মানবিকতার অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। সূত্র : এনডিটিভি
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল