বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ মশার কাছে বিশেষ আকর্ষণীয়, তাদেরই মশা বেশি কামড়ায়। বাকি ৮০ শতাংশ তুলনায় অনেকটাই নিরাপদ থাকেন। বিষয়টি শুধু অস্বস্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং ভয়াবহ রোগ ছড়িয়ে দেওয়ার আশঙ্কাও তৈরি করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ২৫ কোটি মানুষ, মারা গেছেন ৬ লাখেরও বেশি।
একই সঙ্গে বাড়ছে ডেঙ্গু, জিকা, হলুদ জ্বর ও ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসের ঝুঁকি— সবই ছড়ায় মশার কামড়ে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এসব রোগবাহী মশার বিস্তারও বাড়ছে। বিজ্ঞানীরা এখন খতিয়ে দেখছেন— কেন কিছু মানুষ মশার এতটা পছন্দের? চলুন, জেনে নেই গবেষণায় ৮টি প্রধান কারণ হিসেবে কি কি বলা হয়েছে।
রক্তের গ্রুপ
২০০৪ ও ২০১৯ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, টাইপ‑ও রক্তের মানুষেরা মশার কাছে বিশেষ প্রিয়। কারণ তারা সিক্রেটার, অর্থাৎ শরীর থেকে বিশেষ রাসায়নিক নিঃসরণ করেন যা মশার উৎসকে আকর্ষণ করে। টাইপ‑এ ও বি এর তুলনায় তাদের কামড়ের পরিমাণ বেশি।
কার্বন ডাই অক্সাইড
মশা তাদের ম্যাক্সিলারি পালপ দিয়ে নিঃশ্বাসের কার্বন ডাই অক্সাইড শনাক্ত করে। যারা বেশি নিঃশ্বাস ফেলে বা বেশি গ্যাস তৈরি করে, তারা মশার জন্য আকর্ষণীয়।
ব্যায়াম বা শরীরের তাপ
কঠোর ব্যায়ামের ফলে দেহে ল্যাকটিক অ্যাসিড ও তাপ বাড়ে, যেটা মশাকে আকর্ষণ করে। একইভাবে গরমে বেড়ে যাওয়া শরীরের তাপও আকর্ষণ বাড়ায়।
ত্বকের ব্যাকটেরিয়া
ত্বকের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার ধরণ মশার আকর্ষণকে প্রভাবিত করতে পারে।
স্বাদ
২০২৪ সালের ইয়েল ইউনিভার্সিটির গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের ঘামে থাকা কিছু যৌগ মশাকে আকর্ষণ করে, আবার কিছু দমন করে। যৌগের উপস্থিতি কামড়ের পরিমাণকে প্রভাবিত করে।
মদ্যপান
১ লিটার মদ পান করলে মশা বেশি আকৃষ্ট হয়।
গর্ভাবস্থা
গর্ভবতী মহিলারা একটু বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত করেন ও শরীর কিছুটা গরম থাকে। ফলে মশা তাদের দিকে আকৃষ্ট হয়।
জিনগত বৈচিত্র্য
গবেষণায় দেখা গেছে, মশার আকর্ষণের পিছনে প্রতিটি মানুষের জেনেটিক প্রোফাইল অবদান রাখে। রক্ত, গন্ধ বা অন্যান্য উপাদানের মাধ্যমে।
বিজ্ঞানীরা এসব কারণ নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতে হয়তো এমন প্রতিরোধ তৈরি করা যাবে, যা মশার আকর্ষণকারী সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে।
সূত্র : স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন।
বিডি-প্রতিদিন/শআ