বেসরকারি চ্যানেল একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) চেয়ারম্যান আবদুস সালামের জামিন হয়নি। মহানগর দায়রা জজ আদালতও তার জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন। বর্তমানে হাইকোর্টে তিনটি মামলায় জামিনের আবেদন করা হয়েছে। গত ১৬ জানুয়ারি একটি মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। আবদুস সালাম এখনো কারাগারে আছেন।
গত ৪ জানুয়ারি রাতে লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি, বিডিআর বিদ্রোহে হত্যাকাণ্ড, সেনাবাহিনীকে নিয়ে তারেক রহমানের দেওয়া বক্তব্য ইটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এরপর ৬ জানুয়ারি পর্নোগ্রাফি আইনে করা একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। ১১ জানুয়ারি তারেক রহমান ও বেসরকারি টেলিভিশন ইটিভির চেয়ারম্যান আবদুস সালামকে আসামি করে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করে পুলিশ। এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের পৃথক আরেকটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
এ বিষয়ে আবদুস সালামের আইনজীবী ফাতেমা তুজ জহুরা জানান যে, বিভিন্ন গণমাধ্যম রাজনৈতিক বক্তব্য, আলোচনা-সমালোচনা প্রকাশ ও প্রচার করে আসছে। তারই অংশ হিসেবে তারেক রহমানের যে বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে, তা উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়নি। ওই বক্তব্য প্রচারের ঘটনায় কমিটি গঠন করে আবদুস সালাম তদন্তও করেছিলেন। ফাতেমা তুজ জহুরা জানান, ওই বক্তব্য প্রচারের জন্য গত ১৯ জানুয়ারি আবদুস সালাম প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আবদুস সালাম বলেছেন, ২০০৩ সাল থেকে তিনি ইটিভির চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন। ৪ জানুয়ারি রাত ১০টার সংবাদ প্রচারের পর তারেক রহমানের বক্তব্য ইন্টারনেটে লিংক করে ইটিভিতে প্রচার করা হয়েছে। বিষয়টি তিনি পরদিন জানতে পারেন। জবানবন্দিতে তিনি আরো বলেন, প্রচারিত তারেক রহমানের ওই বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে, তা লজ্জাজনক। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু, বিচারপতি, সেনাবাহিনীকে নিয়ে তারেক রহমানের উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচারের দায় ইটিভির চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি এড়াতে পারেন না।
এদিকে, ইটিভির চেয়ারম্যান ছাড়াও আরেক টেলিভিশনের মালিক এনটিভির চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী ফালুকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (অ্যাটকো) সভাপতি এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা। রাজনৈতিক কারণে তাকে ১ ফেব্রুয়ারি আটক করে পুলিশ। পরে রাজধানীর মিরপুর, খিলগাঁও ও বাড্ডা থানার পৃথক তিনটি মামলায় পর্যায়ক্রমে গ্রেফতার দেখানো হয়। তার বিরুদ্ধে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে পরোক্ষভাবে সহায়তা ও পরিকল্পনার অভিযোগ করা হয়েছে। ২ ফেব্রুয়ারি খিলগাঁও থানার মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারি তাকে কারাগারে পাঠানোর হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।
বিডি-প্রতিদিন/২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫/শরীফ