আগামীতে জন্ম সনদের ভিত্তিতে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্টভাবে একক কোনো প্রমাণপত্র নেওয়া হয় না। এক্ষেত্রে শিক্ষিতদের বেলায় বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ নেওয়া হয়। আর যারা পড়াশোনা করেননি, তাদের জন্মসনদ বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দেওয়া পরিচয়পত্র জমা দিতে হয়। এ নিয়ে নাগরিক এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও নানা ঝামেলা পোহাতে হয়।
বিশেষ করে ভুল সংশোধনের জন্য প্রায় সব ধরনের প্রমাণপত্র সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীকে সংযুক্ত করে দিতে হয়। তাই নাগরিকদের ভোগান্তি কমাতে ভবিষতে জন্মসনদের ভিত্তিতেই জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।
এনআইডি নিবন্ধন অণুবিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জন্মসনদের ভিত্তিতে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। ইসির ভাবনা অনুযায়ী, জন্মগ্রহণের পরেই শিশুর জন্ম সনদ করতে হবে। পরে সেই নম্বরের ভিত্তিতেই জাতীয় পরিচয়পত্র দেবে ইসি। এজন্য ইসি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ একসঙ্গে কাজ করবে।
এ বিষয়ে এনআইডি অণুবিভাগের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ জানান, নাগরিকদের নির্দিষ্ট একটি পরিচিতি নম্বর দেওয়ার জন্যই এমন চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন কর্তৃপক্ষকে ইসি থেকে ক্রমিক নম্বর জানিয়ে দেওয়া হবে। তারা সে ভিত্তিতে জন্মের পর কোনো শিশুকে সনদ দেবে। এরপর যোগ্য হলে জন্মসনদের সে নম্বরেই একটি জাতীয় পরিচয়পত্র তাকে সরবরাহ করা হবে। এজন্য বুয়েট, কম্পিউটার কাউন্সিলর সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিদ্যমান ব্যবস্থায় দেশে একজন নাগরিক দু’ধরনের পরিচিতি নম্বর পাচ্ছেন। একটি সরবরাহ করছে নির্বাচন কমিশন ও অন্যটি স্থানীয় সরকার বিভাগ। নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকার ভিত্তিতে জাতীয় পরিচয়পত্র দিচ্ছে আর স্থানীয় সরকার বিভাগ জন্ম সনদ দিচ্ছে।
বর্তমানে দেশে ৯ কোটি ৬২ লাখ ভোটার রয়েছে। যাদের মধ্যে ৯ কোটি ২০ মতো নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহ করেছে নির্বাচন কমিশন। অবশিষ্টদের আইডি কার্ড দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি ইসি।
বিডি-প্রতিদিন/১৭ জুন ২০১৫/শরীফ