বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে বিআইডব্লিউটিসি'র যাত্রীবাহী স্টিমার পিএস মাহসুদ এবং এমভি সুরভী-৭ লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহতের ঘটনায় ৩৫ দিন পর গণশুনানী করেছে বিআইডব্লিউটিএ'র গঠিত তদন্ত কমিটি। গত ৪ মার্চ এই দুর্ঘটনার সময়ে স্টিমারে ঘরমুখো সহস্রাধিক যাত্রী থাকলেও মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) গণশুননীতে অংশ নিয়েছেন মাত্র একজন যাত্রী। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ স্টিমার মাহসুদের ৬ কর্মচারী সাক্ষ্য দিলেও অভিযুক্ত লঞ্চ এমভি সুরভী-৭ এর মালিক-কর্মচারী কেউ গণশুনানীতে উপস্থিত হননি।
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ'র যুগ্ম পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. নুর-উর রহমানের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বরিশাল সার্কিট হাউজে গণশুনানী গ্রহন করেন। যাত্রীদের মধ্যে সাক্ষ্য প্রদানকারী একমাত্র ব্যক্তি হলেন দুর্ঘটনায় আহত স্টিমার যাত্রী বাগেরহাটের স্কুলছাত্র খায়রুল বাশার। এছাড়া পিএস মাহসুদের মাস্টার ইনচার্জ ইদ্রিস হোসেন, সহকারী মাস্টার ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন, সুকানী মাহাবুবুর রহমান, ইঞ্জিন ইনচার্জ আবদুল হামিদ, সহকারী ইঞ্জিন ইনচার্জ মো. শাহীন, বিআইডব্লিউটিএ'র পাইলট মো. শরীফ সাক্ষ্য প্রদান করেন। পরে তদন্ত দল নদী বন্দরে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ স্টিমার পিএস মাহসুদ পরিদর্শন করেন।
তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব কেএম জসিমউদ্দিন বলেন, ওই রাতে দু'টি নৌযানে থাকা যাত্রীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রীর গণশুনানীতে উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য প্রচার-প্রচারনার দায়িত্ব ছিল জেলা প্রশাসনের। গতকাল যাত্রীদের উপস্থিত না হওয়ার কারন তদন্ত কমিটির জানা নেই।
অভিযুক্ত এমভি সুরভী-৭ লঞ্চের মালিক-শ্রমিক পক্ষের কারোর উপস্থিত না হওয়া প্রসঙ্গে জসিমউদ্দিন বলেন, তারা ঢাকায় তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষ্য দেবে।
বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবুল কালাম আজাদ বলেন, গণশুনানীতে উপস্থিত থাকার জন্য নগরীতে মাইকিং এবং স্থানীয় ক্যাবল নেটওয়ার্কে প্রচার করা হয়েছে। সাধারণ জনগণের মধ্যে স্বাক্ষ্য দেয়ার আগ্রহ না থাকায় তারা গণশুনানীতে উপস্থিত হননি।
উল্লেখ্য, ৪ মার্চ ভোর ৫টায় বরিশাল নদী বন্দরের অদূরে সুরভী-৭ লঞ্চের ধাক্কায় স্টিমার পিএস মাহসুদের প্যাডেল সহ বামপাশ বিধ্বস্থ হয়। এতে মাহসুদের পাঁচ যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। পঙ্গুসহ আহত হয় কমপক্ষে আরও পাঁচ যাত্রী। দুর্ঘটনার পর সুরভী-৭ লঞ্চের রুট পারমিট বাতিল করা হলেও অদৃশ্য শক্তির জোরে ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ওই আদেশ বাতিল করা হয়। অন্যদিকে বিধ্বস্ত মাহসুদ এখনও পড়ে আছে বরিশাল নদী বন্দরে। ২ কোটি টাকার অধিক ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করা হলেও বিধ্বস্ত স্টিমারটি সংস্কারের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ