পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় অবশেষে মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেল বন্ধের (লাইসেন্স বাতিল) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অপারেটর বদলে গ্রাহকদের সময় দেওয়া হচ্ছে সাতদিন। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
দেশের অন্যতম পুরনো মোবাইল অপারেটর বন্ধ হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সিটিসেল গ্রাহকরা। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত পরিচিত নম্বরটি বদলে ফেলতে হবে- এমন খবরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে জোর সমালোচনা। হঠাৎ করে মোবাইল নম্বর বন্ধ হয়ে গেলে সিটিসেলের লক্ষ লক্ষ গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়বেন বলে মনে করছেন অনেকে। এক্ষেত্রে গ্রাহকরা বলছেন, এভাবে পুরনো নম্বরটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলে দেশের ভেতরে-বাইরে, ব্যবসা-বাণিজ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হবে। একটা নতুন নম্বর প্রয়োজনীয় সকল স্থানে ছড়িয়ে দেওয়াও সময়সাপেক্ষ।
এদিকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্রাহকদের অপারেটর বদলের জন্য সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল থেকে দিন গণনা শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, সিটিসেল কর্তৃপক্ষের কাছে লাইসেন্স ফি এবং তরঙ্গ ফি বাবদ ৪৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। আজ যেহেতু সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অনুমোদনের জন্য সিদ্ধান্তের কপি পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদন পেলেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
তিনি আরও বলেন, পাওনা আদায়ে মামলা মোকদ্দমা যা করার দরকার সরকার তা করবে।
সিটিসেল বন্ধের সিদ্ধান্ত কেন নিলেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাওনা আদায়ে আমরা তাদের নোটিশ দিয়েছি, জবাব চেয়ে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তারা কোনও জবাব দেয়নি, পাওনাও পরিশোধ করেনি। ফলে দীর্ঘ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।
অন্যান্য অপারেটরদের পাওনার বিষয়ে তারানা হালিম বলেন, টেলিটক ও বিটিসিএল ছাড়া কোনও মোবাইল ফোন অপারেটরের (গ্রামীণ ফোন, বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল) কাছে সরকারের পাওনা নেই। তবে টেলিটক ও বিটিসিএল'র তাদের কাছ থেকে কীভাবে পওনা আদায় করা যায় তার উদ্যোগ সমন্বয় করা হবে।
লাইসেন্স বাতিলের ফলে সিটিসেলে কর্মরত-কর্মচারীরা বেকার হলে সরকারের করণীয় কি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি কোম্পানির অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয়ে সরকারের পরামর্শ দেওয়া বা হস্তক্ষেপ করার কোনও সুযোগ নেই।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ