১৬ এপ্রিল, ২০২১ ০০:২১

খালেদা জিয়ার সিটিস্ক্যান রিপোর্ট খুবই ভালো: চিকিৎসক

নিজস্ব প্রতিবেদক

খালেদা জিয়ার সিটিস্ক্যান রিপোর্ট খুবই ভালো: চিকিৎসক

করোনায় আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে সিটিস্ক্যান করিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তিনি এভার কেয়ার হাসপাতালে পৌছান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সাথেই একটি কক্ষে তার সিটিস্ক্যান করানো হয়। রাত ১০টা ২৬ মিনিটে সিটিস্ক্যান করে বেরিয়ে আসেন বেগম জিয়া। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকরা তাৎক্ষণিক জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের সিটিস্ক্যানের প্রাথমিক রিপোর্ট ভালো। এ জন্যই তিনি বাসায় ফিরে যাচ্ছেন। 

এরপর বেগম জিয়াকে বহন করা প্রাইভেটকারটি রাত পৌঁনে ১১টার দিকে গাড়িটি বাসায় পৌঁছে। বেগুনি রঙের শাড়ী ও মুখে মাস্ক পড়ে হাসপাতালে আসেন বেগম জিয়া। আসা যাওয়ার পথে গাড়িতে ছিলেন তার গৃহকর্মী ফাতিমা ও ব্যক্তিগত নার্স। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে  বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন ও ডা. আল মামুন ছাড়াও এভার কেয়ার হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তানিয়া উপস্থিত ছিলেন। 

জরুরি বিভাগের অভ্যর্থনাকক্ষে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।   

বেগম জিয়ার সিটিস্ক্যানের রিপোর্ট প্রসঙ্গে অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে শুধু এটুকুই বলেন, ‘ম্যাডামের সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট ভালো’। পরে তিনি গুলশানে বেগম জিয়ার বাসভবনের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সিটি স্ক্যানের প্রাথমিক রিপোর্ট পেয়েছি। আলহামদুল্লিাহ, রিপোর্ট ভালো। এ নিয়ে আমরা আগামীকাল মেডিকেল বোর্ড আলোচনায় বসবো। এ ছাড়া আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিনীর সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে ১৪ দিন পর্যন্ত ম্যাডামকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখবো। যে কোনো সময় কোনো সমস্যা হলে আমরা তাৎক্ষণিক যেন পদক্ষেপ নিতে পারি, সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। দেশবাসীর কাছে ম্যাডামের রোগমুক্তির জন্য দোয়া চাই।

এক প্রশ্নের জবাবে ডা. জাহিদ বলেন, আগামীকাল পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট হাতে পাবো। আমাদের মনে রাখতে হবে, করোনা এমন এক  রোগ, কখন কোন দিকে মোড় নেয় তা আগে থেকেই বলা যাবে না। এ কারণেই আমাদের সার্বক্ষণিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখা আছে। আমরা বাসার পাশাপাশি হাসপাতালেও চিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছি। এখনই আমরা পূর্ণাঙ্গ শঙ্কামুক্ত বলতে পারবো না, ১৪ দিন পরই বলতে পারবো। ফুসফুসে কত ভাগ সংক্রমণ থাকে তার জন্য হাই রেজুলেশন সিটি স্ক্যান করা হয়। স্বাভাবিক সিটিস্ক্যানে এটা দেখা যায় না। এ জন্যই সেই টেস্ট করানো হয়েছে। তবে নাম না প্রকাশের শর্তে একজন চিকিৎসক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের লাঙ্কে মাত্র সাত শতাংশ সংক্রমণ হয়েছে। 

এ দিকে বৃহস্পতিবার বিকালে তিন সদস্যের একটি চিকিৎসক দল খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ফিরোজায় যান। সেখান থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন চিকিৎসক দলের প্রধান ডা. এফ এম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো আছেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যেকোন সময় ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) সিটিস্ক্যান করাবো। এজন্য  প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এরপর আমরা বলতে পারবো বাসায় রেখে চিকিৎসা করবো নাকি কয়েক দিন হাসপাতালে রেখে অবজারবেশন করবো। সবকিছুই নির্ভর করবে সিটি স্ক্যান রিপোর্টের ওপর। 

সুস্থতা কামনায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ও পাকিস্তান হাইকমিশনারের চিঠি: এদিকে করোনভাইরাসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে চিঠি দিয়েছেন জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি ও পাকিস্তান হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী। বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, চেয়ারপারসনের সুস্থতা কামনা করে দুই দেশের প্রতিনিধি তার (খালেদা জিয়া) একান্ত সচিব আব্দুর সাত্তার বরাবর এ চিঠি পাঠিয়েছেন।


বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর