এমপি হিসেবে নব-নির্মিত ও নির্মাণাধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর ও শুভ উদ্বোধনের অধিকার বঞ্চিত হওয়ায় সোমবার সংসদের বৈঠকে বিএনপির দলীয় এমপি (চাপাইনবাবগঞ্জ-৩) হারুনুর রশীদ বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্নের নোটিশ আনেন। তবে নোটিশটি উত্থাপনের পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তা খারিজ করে দেন।
এসময় স্পিকার বলেন, গত ২৩ জুন চাপাইনবাবগঞ্জ-৩ এর সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের নিকট থেকে একটি নোটিশপ্রাপ্ত হয়েছি। বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্নের নোটিশ। নোটিশটি ইতিমধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে। হারুনুর রশীদের নোটিশটি সংবিধানের ৭৮ অনুচ্ছেদ এবং সংসদের কার্যপ্রণালীবিধির ১৬৫ এবং ১৬৬ (৩) এর আলোকে বিশেষ অধিকার সংক্রান্ত না হওয়ায় নোটিশটি গ্রহণ করা গেলো না।
হারুনুর রশীদ তার নোটিশে বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আমার নির্বাচনী এলাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় অবস্থিত ‘গণতা সহকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে গত ২৪ এপ্রিল ৪৫, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর) ও ৪৪, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল, ভোলাহাট,গমন্তাপুর) নির্বাচনী এলাকায় নব-নির্মিত ও নির্মাণাধীন মোট ৬৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর ও শুভ উদ্বোধনের ফলক উন্মোচন করেন। যেখানে ৪৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) নির্বাচনী এলাকার স্কুলগুলো বাদ থাকে।
নোটিশে তিনি আরও বলেন, ইতিপূর্বে সংসদ সদস্য থাকাকালীন আমার নির্বাচনী এলাকায় বহু সরকারি/বেসরকারি প্রাইমারি স্কুল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও শুভ উদ্বোধন করি। এছাড়াও নবম ও দশম সংসদের স্থানীয় সংসদ সদস্যও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও শুভ উদ্বোধন করেন। ইহা ছাড়াও খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সারাদেশেই স্থানীয় সংসদ সদস্যরাই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও শুভ উদ্বোধন করছেন। কিন্তু আমার নির্বাচনী এলাকার নব-নির্মিত ও নির্মাণাধীন ৬০টি বিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর ও শুভ উদ্বোধন যেন না করি, সে বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট নির্দেশনা প্রদান করেন। যা বাংলাদেশ সংবিধানের পদের শপথ ( বা ঘোষণা) অনুচ্ছেদের (আমি ভীতি বা অনুগ্রহ, অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হইয়া সকলের প্রতি আইন অনুযায়ী যথাবিহীত আচরণ করিব) ভঙ্গের সামিল। এহেন কর্মকাণ্ডে আমার অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে। বিষয়টি আপনার সদয় অবগতি ও জ্ঞাতার্থে জানানো হইলো। প্রসঙ্গ সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান চলতি সংসদে বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্নের নোটিশ দিয়েছিলেন।
সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ২২তম অধ্যায়ে বিশেষ অধিকার প্রশ্ন নিয়ে বলা হয়েছে, ১৬৫ বিধির বিধি-বিধান সাপেক্ষে কোনো সদস্যের বা সংসদের বা সংসদের কোনো কমিটির বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ন হইয়াছে বলিয়া যে কোনো সদস্য প্রশ্ন তুলিতে পারিবেন। আলোচনার জন্য প্রস্তাবিত বিষয়টি বিধিসম্মত নহে বলিয়া স্পিকার মনে করিলে তিনি প্রয়োজনবোধে বিশেষ অধিকার প্রশ্নের নোটিশটি পড়িয়া শুনাইতে পারিবেন এবং বলিতে পারিবেন যে, বিশেষ অধিকার প্রশ্নের নোটিশটি বিধিসম্মত নহে বলিয়া তিনি মনে করেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই
