ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর চরমোনাই বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সরকার দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী অবৈধ সরকারের পতন আজ অনিবার্য হয়ে গেছে। জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। মানুষের অধিকার নেই। ভোটের অধিকার অনেক আগেই কেড়ে নেয়া হয়েছে। এখন বাক-স্বাধীনতাও কেড়ে নিচ্ছে। এমনকি রাজনৈতিক অধিকারও কেড়ে নিয়ে ঘরোয়া কর্মসূচিতেও বাধা দিচ্ছে। সরকারের জনসমর্থন এখন তলানীতে। সরকার চরমভাবে হতাশাগ্রস্ত।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, দেশপ্রেমিক জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধ। আওয়ামী লীগ আজ বাঘ-সিংহের ভূমিকায়। কিন্তু জনগণ একত্রিত হলে লেজগুটিয়ে পালাতে বাধ্য হবে। মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ, ভালো চাইলে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে দেশকে সংঘাতের হাত থেকে রক্ষা করুন।
বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর পুরান পল্টনস্থ ইসলামী আন্দোলনের কার্যালয় চত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মোড়েলগঞ্জে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বক্তব্য প্রদানকালে পুলিশের বাধা ও অসৌজ্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ, ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিল, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (চ.জ) পদ্ধতির প্রবর্তন, বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম ও ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, ডা. শহিদুল ইসলাম, ইসলামী যুব আন্দোলনের সেক্রেটারী জেনারেল মুফতী মানসুর আহমদ সাকী, মাওলানা নুরুল ইসলাম নাঈম, হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমান, মুহাম্মদ ফজলুল হক মৃধা, যুবনেতা হাফিজুল হক ফাইজ, মুফতী শওকত ওসমান, পারভেজ মিয়া, সিয়াম, কাওছার মাহমুদ প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন মুফতী ফরিদুল ইসলাম ও কেএম শরীয়াতুল্লাহ।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, মোড়েলগঞ্জে দলের নায়েবে আমীর মুফতী ফয়জুল করীম এর ঘরোয়া কর্মসূচিতে বাধা এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক অবস্থানকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাবার ইঙ্গিত।
অতিউৎসাহী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে পীর সাহেব বলেন, আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, বিশেষ কোন দলের কর্মচারী নন। হিসেবে-নিকাশ করে কাজ করুন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় পুনরায় যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে আছে। ‘শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে’ সরকার দলীয় নেতাদের বক্তব্যে দেশকে অনিশ্চিয়তার দিকে নিয়ে যাবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, দেশের মানুষ নানা সঙ্কট ভোগ করছে। নিত্যপণ্যের সীমাহীন মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। সারাদেশে ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করলেও সরকারের কোন কর্মসূচি নেই। জনগণের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই।
মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেন, অর্থ লুট-পাট, দুর্নীতি, দুঃশাসন, অর্থ পাচার করে দেশকে দেউলিয়া করে দিয়েছে। তারা উন্নয়নের নামে নিজেদের উন্নয়ন করেছে। জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে এর বিকল্প নেই। মানুষ মৌলিক অধিকার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা বঞ্চিত।
মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, সরকারের প্রশাসনের লোকজন কাকে কিভাবে সম্মান করতে হয়, তা জানে না। একজন শীর্ষ আলেমের সঙ্গে বেয়াদবিপূর্ণ আচরণ মেনে নেয়া যায় না। দুর্নীতি, ঘুষ, চুরি-ডাকাতির উন্নয়ন হয়েছে। সর্বত্র ঘুষ ও দুর্নীতিতে সয়লাব।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত