স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান কিরগিজস্তানে অধ্যয়নরত মিশরের কয়েকজন মেডিকেল শিক্ষার্থী। এরপর সেখানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা শুরু করেছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, এর জেরে কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও হামলার শিকার হয়েছেন। ফলে সেখানে নিরাপত্তাহীনতা আর আতঙ্কে দিন কাটছে বাংলাদেশের বেশ কয়েক শ’ মেডিকেল শিক্ষার্থীর।
উল্লেখ্য, মধ্য এশিয়ার দেশটিতে বাংলাদেশের কোনও দূতাবাস নেই। তবে উজবেকিস্তানে থাকা বাংলাদেশের দূতাবাস কিরগিজস্তানের দায়িত্ব পালন করে থাকে। দেশটিতে থাকা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দূতাবাস সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে বলে জানা গেছে।
যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত
গত ১৩ মে বিশকেক শহরে স্থানীয় দু-তিনজন বাসিন্দার সঙ্গে মিশরীয় কয়েকজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর ১৬ মে রাত থেকে বিশকেক শহরে থাকা বিদেশিদের ওপর হামলা শুরু করেন স্থানীয়রা। সেখানে থাকা বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। শহরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদেশিদের মারধর ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এমনকি মেডিকেল কলেজগুলোর হোস্টেলে তারা ঢুকে পড়েছেন। শহরজুড়ে পুলিশ মোতায়েন থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের কক্ষের বাইরে যেতে নিষেধ করেছে। হঠাৎই সহিংসতা শুরু হয়। ফলে অনেকেই নিজ নিজ কক্ষে ফিরতে পারেননি। যে যেখানে পেরেছেন, আত্মগোপন করেছেন।
একজন শিক্ষার্থী বলেছেন, শুধু বিদেশি শিক্ষার্থী নয়, বিদেশি শ্রমিকদের ওপরও হামলা করছে স্থানীয়রা। সংক্ষুব্ধ স্থানীয় লোকজন ছাত্রাবাসের বাইরে অবস্থান করছে। বিদেশিদের পেলেই তারা নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে।
তাৎক্ষণিকভাবে সঠিক পরিসংখ্যান জানা না গেলেও কিরগিজস্তানে ৬০০ থেকে ৮০০ শিক্ষার্থী আর হাজারখানেকের মতো বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে উজবেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, কিরগিজস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে- পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া কোনও বাংলাদেশির আহত বা নিহত হওয়ার কোনও তথ্য এখনও নেই। তিনি বলেন, “আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বাসা থেকে বের না হতে বলা হয়েছে। তবে আবারও সহিংসতা হয় কিনা সে ব্যাপারে আতঙ্ক বিরাজ করছে।”
বিডি প্রতিদিন/একেএ