প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ‘বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা হলে এই বিভাগের প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে শক্তিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছি। এর অংশ হিসেবে পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ইতোমধ্যে একটি প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠিয়েছি। একই সঙ্গে উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে জুডিশিয়াল নিয়োগ কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে।’
আজ শনিবার সকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভবনে ২০২৪ সালে সমিতির সদস্যভুক্ত হওয়া নবীন আইনজীবীদের জন্য আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। কর্মশালার মূল অধিবেশন শুরুর আগে চট্টগ্রামে একই ব্যাচের আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনায় দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে আলিফ হত্যাসহ ৫ আগস্টকে ঘিরে আন্দোলনে নিহত ও আহতদের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।
নবীন আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে বলেন, ‘নৈতিকতা হচ্ছে আইন পেশার মূলভিত্তি। এই নৈতিকতা প্রতিটি আইনজীবীর চরিত্র এবং বিশ্বাসযোগ্যতাকে সংজ্ঞায়িত করে।’
তিনি বলেন, ‘নতুন আইনজীবীদের সবসময় সততা ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে হবে। কারণ একজন কোর্ট অফিসার হিসেবে আপনার কাজগুলো কেবল মামলার ফলাফলই ঠিক করে না, বরং দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর মানুষের বিশ্বাসকেও প্রভাবিত করবে। তবে সম্প্রতি আদালতগুলোতে যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তাতে মনে হচ্ছে আমাদের নৈতিকতা ও আদর্শে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ন্যায়বিচার সমুন্নত রাখতে বার এবং বেঞ্চকে এক হয়ে কাজ করে যেতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে আইনের পথে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ আসবে। তবে সাহস, সততা এবং ন্যায়বিচারের আদর্শের প্রতি বিশ্বাস রেখে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। তাহলেই কেবল আইনের শাসন আমাদের সমাজের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে।’
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ