প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, আমরা এমন দৃষ্টান্ত রেখে যেতে চাই, যেখানে সবাই বলবে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ শুধু রায় প্রদান করেনি, বরং প্রকৃত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেছে।
আজ বিকেলে সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে ‘ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে লিগ্যাল এইডের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, অ্যটার্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক সৈয়দ আজাদ সুবহানী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য সচিব সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম জামিউল হক ফয়সাল।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা যে পথে পা রেখেছি, তা চ্যালেঞ্জশূন্য নয়। তবে দেশের বিচার বিভাগের সাড়া দেখে আমি গভীরভাবে অনুপ্রাণিত। তিনি বলেন, রাজধানীসহ দেশের সাতটি বিভাগ ঘুরে আমি বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের জরুরি বার্তা পৌঁছে দিয়েছি। বিচারক, ম্যাজিস্ট্রেট এবং আইন পেশার সদস্যদের কাছে আহ্বান জানিয়েছি তারা যেন এই যৌথ দায়িত্বকে নিজের বলে গ্রহণ করেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, এই যাত্রায় আমাদের উন্নয়ন সহযোগীরাও আমাদের পাশে রয়েছেন। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) আমাদের সংস্কার প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, সুইডেন এবং অন্যান্য অংশীদাররা শুধু প্রযুক্তিগত সহায়তা নয়, নৈতিক সমর্থনও দিয়েছেন। আমাদের এই ভিশনের প্রতি তাদের বিশ্বাস আমাদের অঙ্গীকারকে আরও শক্তিশালী করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে হবে বাংলাদেশের সেই মানুষটি, যারা দেশের দূরবর্তী অঞ্চলগুলো থেকে ন্যায়বিচারের আশায় পথ চেয়ে থাকেন। আজ আইন সহায়তা দিবসে আমি সরকারের কর্মকর্তা, আইনজীবী, বিচারক, গণমাধ্যম ও উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বান জানাই, মানুষকেন্দ্রিক ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে সবাই যেন নতুন করে প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেন।
প্রধান বিচারপতি নিজের বক্তব্যে নাগরিকের বিচার সেবায় অভিগম্যতা এবং বিচার সংক্রান্ত অবাদ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে দেশের সকল অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের নাগরিকের বিচারিক সেবা প্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা ও অনিয়ম দূর করতে সুপ্রিম কোর্টের মতো হেল্পলাইন চালু করার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, দেশের ৬৪ জেলা এবং ৮ মহানগর এলাকায় হেল্পলাইন সেবা সচল করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিচারপ্রার্থিরা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের অভিযোগ জানাতে পারবেন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল