মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ইলিশের উৎপাদন কিছুটা কমার পেছনে প্রাকৃতিক কারণ রয়েছে। যার মধ্যে নদীর নাব্যতা কমে যাওয়া, নদী দূষণ বৃদ্ধি পাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানান কারণ রয়েছে। আবার প্রাকৃতিক নানা কারণের পাশাপাশি তথাকথিত উন্নয়নের কারণে আমাদের নদী ভরাট হচ্ছে, নদী দখলও হচ্ছে। কিন্তু ইলিশ তো সমুদ্র থেকে নদীতে আসবে, আবার নদী থেকে সমুদ্রে ফিরেও যাবে, অথচ বিভিন্ন কারণে সে সেটা করতে পারছে না।
সোমবার দুপুর ১২টায় বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে উপকূলীয় এলাকার মহিষের চারণভূমি ও উন্নয়নের সমস্যা এবং সমাধান শীর্ষক জাতীয় কর্মশালা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, বড় অসুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছে জাটকা নিধন হওয়া। নৌবাহিনী, কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জাটকা রোধে প্রচুর অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু তাতেও জাটকা নিধন রোধ করা যাচ্ছে না। তারপরে কারেন্ট জালসহ অবৈধ জালের ব্যবহারও বন্ধ করা যায়নি। ফলে সবমিলিয়ে ইলিশের প্রাপ্যতা কমে যাচ্ছে। তবে বর্তমানে এগুলো রোধে শক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, অবৈধ জাল উৎপাদনের কারখানা বন্ধ করার পাশাপাশি অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে মাছ ধরাও বন্ধ করছি।
ফরিদা আখতার বলেন, ইলিশের দাম সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অতিসত্তর সভা করা হবে। যেখানে নদী থেকে বাজারে আসার পর হাত বদলের কাহিনী বন্ধ করতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তা নিয়ে কথা হবে। এছাড়া আর কী কী কারণে ইলিশের দাম বৃদ্ধি পায়, তার বিরুদ্ধেও একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চাচ্ছি।
তিনি বলেন, দেশে চারণভূমি কমে যাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে চারণভূমির জমিতে বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে, এমনকি চারণভূমিতে বিশ্ববিদ্যালয় করারও দাবি উঠছে। এগুলো দুঃখজনক। মানুষের জীবন-জীবিকার রক্ষার পাশাপাশি আমাদের দেশের প্রোটিনের সমস্যা মেটানোর জন্য গরু-ছাগল-মহিষ পালন অত্যন্ত জরুরি। সেখানে আমরা দেখছি চারণভূমিতে পরিকল্পনাহীনভাবে অনেক কিছু গড়ে উঠছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ফলে এরই মধ্যে মহিষের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ক্ষতির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে। তারপরও আমরা আশাবাদী সঠিক নীতি নির্ধারণী ব্যবস্থা নিতে পারলে এখনো চরাঞ্চলে যে চারণভূমি আছে, সেগুলো রক্ষা করা সম্ভব।
উপদেষ্টা বলেন, গরু পালনের মাধ্যমে আমরা মাংসের প্রাপ্যতা পূরণ করতে পারছি না। এখানে মহিষের মাংসের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি করতে পারলে সেটা সার্বিকভাবে মাংসের সরবরাহে বড় জোগান হবে। এমনকি দুধও বৃদ্ধি পাবে, যেখান থেকে চিজসহ অনেককিছু তৈরি করে রপ্তানিও করতে পারবো। ফলে এ বিষয়ে আমরা অনেক উৎসাহী ও আশাবাদী।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বাফেলো অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে পিকেএসএফ উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, জিজেইউএস নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই