বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সলিমুল্লাহ এতিমখানাকে ১৮ তলা ভবন হস্তান্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর আজিমপুরে ১৮ তলা কনকর্ড ভবনটি স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল ঢাকা জেলা প্রশাসক উপস্থিত থেকে ভবনটি হস্তান্তর করেন। ভবনটি হস্তান্তরের সময় ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, এ জায়গাটি দেওয়ার উদ্দেশ্যই ছিল এটি এতিমদের স্বার্থে ব্যবহৃত হবে। কিন্তু এতিমদের স্বার্থ না দেখে কনকর্ড ভবনটি ব্যক্তিগত স্বার্থে দেখা হয়েছে। পরে এতিমখানার ছাত্ররা হাই কোর্টে রিট করে। ওই রিটের রায়ে কনকর্ড ভবনটি সলিমুল্লাহ এতিমখানাকে বুঝিয়ে দিতে বলা হয়। যে কারণে আজ (গতকাল) আমরা সলিমুল্লাহ এতিমখানার প্রশাসকের কাছে ১৮ তলা কনকর্ড ভবনটি হস্তান্তর করলাম। ৯ জুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ আদেশে বলেন, আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার জায়গায় আবাসন প্রতিষ্ঠান কনকর্ডের তৈরি ১৮ তলা ভবন এতিমখানাকে বুঝিয়ে দিতে হবে।

এ ছাড়া আদালতের রায় অনুযায়ী যারা এতিমদের স্বার্থ রক্ষা না করে ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার্থে কারসাজি করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পুলিশের কাছে চিঠি দেওয়া হবে। পুলিশ এটিকে ক্রিমিনাল মামলা হিসেবে গ্রহণ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

সলিমুল্লাহ এতিমখানার প্রশাসক ও সমাজসেবা অধিদফতরের পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রায়ের পর আমরা ৩০ দিন অপেক্ষা করেছি। এরপরও কনকর্ড ভবনটি আমাদের বুঝিয়ে দেয়নি। যার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছিলাম। ঢাকা জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে ভবনটি আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সময় ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাজমা নাহার, লালবাগ সার্কেলের এসিল্যান্ড শেখ মো. মামুনুর রশীদ, লালবাগ থানার পরিদর্শক মো. আনিছুর রহমানসহ এতিমখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

গত উল্লেখ্য, প্রথম এই ভবন নিয়ে প্রতিবাদ করায় সলিমুল্লাহ এতিমখানার তৎকালীন ছাত্র মো. হারুনুর রশিদ ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন। পরে তিনি ফিরে এলে তার নেতৃত্বেই দুর্বার আন্দোলন গড়ে ওঠে এবং হাই কোর্টে চারজন ছাত্রকে বাদী করে রিট পিটিশন নম্বর ১৯৪০ দায়ের করেন। গত ১০ বছর ধরে তিনি রিটপিটিশনটি এককভাবে পরিচালনা করে আসছেন এবং সর্বশেষ সিআরপি ৩২/২০১৯ যেন নিষ্পত্তি না করতে পারে সে জন্য মিথ্যা সাজানো মামলায় পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করে হারুন এবং রিট পিটিশনার মো. ইউসুফ মোল্লাকে তিন মাস ১০ দিন জেল খাটানো হয়। তারা জেল থেকে বের হয়ে হাই কোর্টে ৩৭০৭/২০২১ মামলা দায়ের করেন এবং ওই রিটের নির্দেশনা অনুযায়ী সমাজসেবা অধিদফতরের পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরীকে সলিমুল্লাহ এতিমখানার প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করেন। তার নেতৃত্বে সিআরপি ৩২/২০১৯ মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি হয়।

সর্বশেষ খবর