ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইরানের পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে এক নাটকীয় ও উত্তেজনাপূর্ণ ফোনালাপ হয়েছে। গত সোমবার (৯ জুন) এই টেলিআলাপের সময় ট্রাম্প নেতানিয়াহুর ওপর বেশ ক্ষেপে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। গাজায় স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য তাকে সরাসরি নির্দেশ দেন।
ইসরায়েলি টেলিভিশন সূত্রে জানা গেছে, ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন গাজায় বর্তমানে ৬০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পর্যাপ্ত হবে না। ট্রাম্পের মতে, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ হলে তা ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক আলোচনায় সহায়ক হবে। একইসাথে এর মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের আলোচনাও চালানো যাবে।
তবে দখলদার নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে রাজি হননি। তিনি এবং তার উগ্রপন্থি জোট সরকার বারবারই বলে আসছে হামাসকে গাজা থেকে নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত তারা যুদ্ধ থামাবে না।
ফোনালাপে ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে ইরানে এখন কোনো হামলা না চালাতেও নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার মাধ্যমে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একটি পারমাণবিক চুক্তি করতে চায়। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল-১২ জানিয়েছে, ট্রাম্প যতক্ষণ পর্যন্ত মনে না করবেন যে ইরানের সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে, ততক্ষণ ইরানে হামলার ব্যাপারে কোনো প্রস্তুতি নেওয়া হবে না। সংবাদমাধ্যমটিকে দুটি সূত্র জানিয়েছে, নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ইরানে তারা একাই হামলা চালাবে কি না, অথবা হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্র এতে নেতৃত্ব দেবে কি না। তবে ট্রাম্প এ প্রশ্নের স্পষ্ট কোনো উত্তর দেননি।
ফোনে আলোচনার সময় ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে আরও বলেন, যদিও সাম্প্রতিক সময়ে ইরান আলোচনায় কঠোর হয়ে গেছে, তবুও তিনি মনে করেন না ইরানের সঙ্গে আলোচনা ভেস্তে গেছে অথবা আলোচনার পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
অন্যদিকে, সংবাদমাধ্যম কান জানিয়েছে নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে বলেছেন, “ইরানের সঙ্গে আলোচনা করা নিরর্থক, ইরান আপনার সঙ্গে খেলছে এবং সময়ক্ষেপণ করছে।” এর জবাবে ট্রাম্প বলেন, “ইরানে হামলার ব্যাপারে আপনি যেসব কথা বলছেন সেগুলো কোনো সহায়তা করছে না। আমরা চুক্তি নিয়ে কাজ করছি।”
এই ফোনালাপ থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, গাজা ও ইরান নীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের মধ্যে বড় ধরনের মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল