আগামীকাল (১৮ জুন) ডেনমার্কে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০১১ সালে নির্বাচনে রেড ব্লক ৯২ আসন পেয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করে। ব্লু- ব্লক কে ৮৭ আসন নিয়ে বিরোধীদলের আসনে বসতে হয়েছিল। এবারের ২০১৫-এর নির্বাচনে ও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে বিভিন্ন জরিপে। ডেনমার্কের নির্বাচনে ১৭৫ আসনের মধ্যে কমপক্ষে ৯০ আসন পেলে ক্ষমতায় আসা যায়। সেই জন্য ৯০ সংখ্যাকে ডেনমার্ক নির্বাচনের ম্যাজিক ফিগার বলা হয়।
রেড ব্লকে সবচেয়ে বড় দল সোশ্যাল ডেমোক্রাট পার্টি প্রধান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হেলে থ্রনিং। তার সাথে আছে সোস্যাল লিবারেল পার্টি (রেডিকাল ভেনেস্ত্রা ), সোস্যাল পিপলস পার্টি ও এন হেলিসতেন পার্টি। ২০০১ থেকে ২০১১ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা ব্লু ব্লক'র বড় দল ডেনিশ লিবারেল পার্টি (venestra ) প্রধান লার্স লুকে রাসমুসেন। ব্লু ব্লকে অন্যান্য দল সমূহ কনজারভেটিভ পার্টি,লিবারেল আল্যান্স ,ক্রিস্টিয়ান ডেমো ক্রেট ও ডেনিস পিপলস পার্টি। বর্তমান জরিপে সবচেয়ে বড় দল ডেনিস পিপলস পার্টি। আগামীতে রেড বা ব্লু ব্লক যারাই নির্বাচনে জিতুক না কেন এর বাইরে কেউ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু এবারের নির্বাচনে গতবারের চেয়ে আরো বেশি শক্তিশালী লড়াই হবে এটা নিশ্চিত।
ডেনিশ নির্বাচনের সমসাময়িক অবস্থা নিয়ে কথা বলেছি বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া, বর্তমান ডেনিশ রাজনীতিতে রেড ব্লক-এর সহযোগী সোশ্যাল লিবারেল পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, ফ্রেদ্রেকিস বিয়া অঞ্চলের প্রধান জনাব মাহবুবুল হকের সাথে এবং ডেনমার্কের সাধারণ জনগণের অভিমত হলো, রেড ব্লক ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে চিকিৎসা, যোগাযোগ, শিক্ষা ও জনগণের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের উন্নতি সাধন করে। বেশি আয় করা মানুষের বেশি ট্যাক্স এই নীতিকে সম্বল করে জনগণের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানকে আরও বেশি সহজলভ্য করে দিয়েছে। মানুষ যাতে সহজে দূর-দূরান্তে অফিসে গিয়ে কাজ করতে পারে সেইজন্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস এর আমূল পরিবর্তন সাধন করেছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি কম সময় অপেক্ষা করে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে।
প্রবাসীদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি শীতলতার কারণে ইমিগ্রান্ট জনগণের এখনও প্রথম পছন্দ রেড ব্লক। অন্যান্য সময়ের তুলনায় এখন আরও কম সময়ে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থী মানুষের আবেদন মানবিক বিবেচনায় দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে। অপরদিকে ব্লু ব্লক ২০০১ -২০১১ পর্যন্ত , বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়ার পর ডেনমার্কের অবস্থা ২০০৮ পর্যন্ত অনেক ভালো ছিল। কিন্তু তৎকালীন ব্লু ব্লকের সরকার অনেক অর্থ রিজার্ভ থাকার পর ও অর্থের সুষ্ঠ বিন্যাস করতে পারেনি বলে তৎকালীন অনেক কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায় এবং চাকরি হারায় অনেক মানুষ। তার পরিণতিতে ব্লু ব্লক ২০১১ নির্বাচনে মার্জিনালি হেরে যায়। ব্লু ব্লকের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রবাসী বা ইমিগ্র্যান্টের কঠিন নিয়ম করে শুধু ডেনিশ নাগরিকদের সেবা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। অন্যান্য দেশে সাহায্যের পরিমাণ কমিয়ে ডেনমার্কের রিজার্ভ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। বর্তমান রেড ব্লকের সরকার তৃতীয় বিশ্বের দেশ সমূহের উন্নয়নে প্রচুর করে যাচ্ছে এবং অর্থ বরাদ্ধ করছে। আগামী ১৮ জুন ডেনমার্ক এর ভোটারদের হাতেই হেলে থ্রনিং ও লারস লুকে রাসমুসেনের ভবিষ্যৎ।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৭ জুন, ২০১৫/ রশিদা