২০১৩ অর্থ বছর পর্যন্ত ১০ বছরে ৬৬ হাজার ৩৬১ জন বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। এ সময়ে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ২৬২ জন ভারতীয় শপথ নিয়েছেন। অপরদিকে পাকিস্তানি এক লাখ ৮ হাজার ৬৯৬, আফগান ২০ হাজার ১১৬, ইন্দোনেশিয়ান ১৭ হাজার ৯০৫, মালয়েশিয়ান ১৭৩১ এবং শ্রীলঙ্কান ১১ হাজার ৮৫৭ জন শপথ গ্রহণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে। এ দশকে সারাবিশ্বের ৭১ লাখ ৪৫ হাজার ৯২০ জন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে শপথ নিয়েছেন। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টে ইউএস সিটিজেনশিপ এন্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসের (ইউএসসিআইএস) জনসংযোগ কর্মকর্তা ক্যাটি টিকেচেক ক্যাপলান এসব তথ্য জানান।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার পরের বছর থেকেই জাতীয়ভিত্তিক এ সংখ্যা সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলেই এর আগের তথ্য জানা সম্ভব হয়নি ইউএসসিআইএসের এই কর্মকর্তার কাছে থেকে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালে সবচেয়ে বেশী বাংলাদেশি সিটিজেনশিপ গ্রহণ করেন। এ সংখ্যা হচ্ছে ৯৫৭১। দ্বিতীয় বৃহত্তম সংখ্যা ৮৪১৭, ২০১২ অর্থ বছরে। এর আগের বছরগুলোতে সিটিজেনশিপ গ্রহণ করেন ২০০৪ সালে ৫১৪৮, ২০০৫ সালে ৫৫০৩, ২০০৬ সালে ৬৬৮৩, ২০০৭ সালে ৪৭৪৬, ২০০৮ সালে ৫৩৪৫, ২০০৯ সালে ৬৬৪৪, ২০১০ সলে ৬৯৭৯, ২০১১ সালে ৭৩২৫ জন বাংলাদেশী শপথ নেন সিটিজেন হিসেবে। অপরদিকে, ২০১৩ অর্থ বছরে ৪৯ হাজার ৮৯৭ জন ভারতীয় শপথ নিয়েছেন। ২০১৩ অর্থ বছরে সারাবিশ্বের ৭ লাখ ৭৯ হাজার ৯২৯ জন শপথ নেন স্বপ্নের দেশ আমেরিকার সিটিজেন হিসেবে।
এ যাবত মোট ২ লাখ বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেনশিপ গ্রহণ করলেন বলেও ইমিগ্রেশন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এর ৪ গুণ বেশী অর্থাৎ প্রায় ৮ লাখ রয়েছেন গ্রিনকার্ডধারী। গ্রিণকার্ড পাবার ৫ বছর পর সিটিজেনশিপ পাওয়া যায়। সামগ্রিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিকত্ব গ্রহণে এগিয়ে রয়েছেন এশীয়রা। চীন ও ভারতের নাগরিকেরা রয়েছেন শীর্ষে। প্রতিবেশি মেক্সিকোর রেকর্ড ভঙ্গ করেছে এ দুটো দেশ। ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আগত ১২ লাখ অভিবাসীর মধ্যে এক লাখ ৪৭ হাজার এসেছে চীন থেকে এবং এক লাখ ২৯ হাজার এসেছে ভারত থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত বরাবর মেক্সিকো থেকে বহুকাল ধরে সর্বাধিক সংখ্যায় অভিবাসী নাগরিকত্ব গ্রহণ করে আসছিল। এখন এর ব্যত্যয় ঘটতে শুরু করেছে। ২০১৩ সালে মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আগত অভিবাসীর সংখ্যা ছিল এক লাখ ২৫ হাজার।
এ পরিবর্তনের কথা জানিয়েছে অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য সেবাদানকারী মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউটের সিনিয়র পলিসি রিসার্চার জেনি বাটালোভা। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার ৪৭ শতাংশই ন্যাচারালাইজড সিটিজেন, যাদের ৫৯ শতাংশই এশিয়ান। চীনের মতো অনেক দেশ দ্বৈত নাগরিকত্বের স্বীকৃতি না দিলেও বেশ কিছু দেশ এরই মধ্যে তাদের দ্বৈত নাগরিকত্বের আইন সংশোধন করেছে এবং যেসব দেশ দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ রাখেনি তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ আকর্ষণীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করার কারণে আকর্ষণীয় অর্থনৈতিক সুযোগও ভোগ করা যায়। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাচারালাইজড নাগরিকেরা আয় করে বেশি।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৭ জুন, ২০১৫/ রশিদা