বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার ষড়যন্ত্রে দেশি-বিদেশি শক্তিগুলোর সম্পৃক্ততা খুঁজে বের করার উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
তাঁরা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে বিদেশি রাষ্ট্রের ভূমিকা, বিশেষ করে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর ভূমিকা অবশ্যই তদন্ত হওয়া উচিৎ।
শোক দিবস উপলক্ষে টরন্টোয় বাম প্রগতিশীল বাংলাদেশিদের বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন প্রগতিশীল গনতান্ত্রিক উদ্যোগ (পিডিআই) আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এই দাবি জানান।
পিডিআই'র আহ্বায়ক, প্রবীন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আজিজুল মালিকের সভাপতিত্বে এই আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিটু খন্দকার। বক্তৃতা করেন, ডাকসুর সাবেক এজিএস নাসির উদ দোজা, টরন্টো সফরে আসা দৈনিক ইত্তেফাকের সিনিয়র সাংবাদিক ফরিদা ইয়াসমিন, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া, বিদ্যুৎ রঞ্জন দে, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী মাহাফুজুল বারী, 'নতুনদেশ' এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর, ফারহানা আজিম শিউলী, ড. মনজুরে খোদা টরিক, মো. মাশুক, সৌমেন সাহা, মিনারা বেগম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক সাবেক ছাত্রনেতা মাহবুব আলম জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একজন সার্বজনীন নেতা- সেই বিশ্বাস থেকেই আওয়ামী লীগের দলীয় ফোরামের বাইরে মহান এই নেতার কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন আদর্শের মূল্যায়নের মধ্য দিয়েই তিনি যে একজন সার্বজনীন নেতা তা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
সাবেক ছাত্রনেতা নাসির উদ-দোজা তাঁর বক্তৃতায় বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পেছনে বিদেশি শক্তি বিশেষ করে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ'র ভূমিকা তদন্তের আওতায় আনা দরকার। বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ এই ব্যাপারে মার্কিন সরকারের কাছে দাবি তোলা।
দৈনিক ইত্তেফাকের সিনিয়র সাংবাদিক ফরিদা ইয়াসমিন কানাডায় বসবাসরত বঙ্গবন্ধুর খুনী নুর চৌধুরীকে কানাডা থেকে বহিষ্কারের জন্য সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কানাডার নাগরিক হিসেবে আপনারা আপনাদের সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করুন- আপনারা একজন খুনীর সঙ্গে সহাবস্থান করতে চান না- এই বার্তাটি আপনাদের সরকারের কাছে তুলে ধরুন।
প্রবীন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আজিজুল মালিক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্ন থেকেই তিনি সংবিধানে চারটি মূলনীতির সন্নিবেশ ঘটিয়েছিলেন। রাষ্ট্রীয় জীবনে সেই চার মূলনীতি না থাকলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিচ্যুতি ঘটে।
মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি তথা '৭২ এর সংবিধান পুণপ্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার যথাযথ প্রতিশোধ নেওয়া সম্ভব। কেননা, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশকে যে পেছনমুখী করা হয়েছিলো, '৭২ এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার মধ্য দিয়েই দেশকে আবারো সম্মুখমুখী করা সম্ভব।
টিটু খন্দকার তাঁর মূল প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবনের বিভিন্ন পর্যায়গুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা এবং কমিউনিষ্ট ন্যাপ এর ভুল ৫ আগষ্টের পরিস্থিতি তৈরিতে সহায়তা করেছে।
বিডি-প্রতিদিন/১৭ আগস্ট, ২০১৫/ এস আহমেদ