বাংলা নববর্ষ ১৪২৬-কে স্বাগত জানিয়ে আবহমান বাঙালি সংস্কৃতির নানা পাল তোলা নৌকা, ঢাক-ঢোল-একতারা, নকশী কাঁথা, ডালা-কুলা, তাল পাতার পাখা, মাটির পুতুলের দৃষ্টিনন্দন প্রতিকী ব্যবহার ও বাদ্য যন্ত্রের তালে তালে মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে এবারও পহেলা বৈশাখ উদযাপন করেছে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।
গত সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় হোটেল রেনিসনের হলরোমে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। দূতাবাসের আয়োজনে জমকালো এ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সেখানে সমবেত হন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ডিরেক্টর জেনারেল ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ ব্রুনাই, কিউবা, ইজিপ্ট, জরদান, লিসুতু, মরিসাস, মালদ্বীপ, নামিবিয়া, ভারত, নেপাল, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, চীন, সাউথ অফ্রিকা, ইতালি, ফিলিপাইন, পোল্যান্ড, সেনেগাল ও ৩৮ দেশের কূটনীতিক ও পদস্থ কর্মকর্তারা।
ছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা। ডেপুটি হাইকমিশনার ওয়াহিদা আহমেদের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে হাইকমিশনার মুহঃ শহীদুল ইসলাম বিদেশি অতিথিদের সামনে বাংলা নববর্ষের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার বিবরণ তুলে ধরেন।
তিনি জানান, বাংলা বর্ষবরণের এই ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেস্কোর ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ধারণ করে ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং উন্নয়নের মহাসড়ক বেগবান করছেন তার কন্যা শেখ হাসিনা।
পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে আগত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও প্রবাসীদের নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান তিনি। বৈশাখী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের ডিফেন্স উইং প্রধান এয়ার কমডোর মো. হুমায়ূন কবির, ফার্স্ট সেক্রেটারি মাসুদ হোসাইন কমার্শিয়াল উইং মো. রাজিবুল আহসান, শ্রম শাখার প্রথম সচিব মো. হেদায়েতুল ইসলাম, পাসপোর্ট/ভিসা শাখার ফার্স্ট সেক্রেটারি মো. মশিউর রহমান তালুকদার, ফার্স্ট সেক্রেটারি তাহমিনা ইয়াসমিন, হাইকমিশনের শ্রম শাখার দ্বিতীয় সচিব ফরিদ আহমদসহ বিপুলসংখ্যক প্রবাসী।
শ্রম কাউন্সিলর মো. জহিরুল ইসলামের ব্যবস্থাপনায় রমনা বটমূলের আদলে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ সময় অনুষ্ঠানে বড়দের পাশাপাশি শিশু-শিল্পীরা নাচে-গানে মাতিয়ে তোলেন পুরো অনুষ্ঠান। ভিনদেশি, ভিন্ন সংস্কৃতির প্রায় দুইশ'রও বেশি মানুষ এ অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন। এসময় অতিথিদের করতালিতে সিক্ত হন শিল্পীরা। এ সময় বৈশাখের আনন্দঘন এ আয়োজন পরিণত হয় যেন এক টুকরো বাংলাদেশে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর