প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে অবৈধ অভিবাসী গ্রেফতারের অভিযান জোরদার হওয়ায় বাংলাদেশীরাও ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ৩ জুলাই পর্যন্ত এক মাসে নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়া, মিশিগান, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, ক্যালিফোর্নিয়া প্রভৃতি স্টেটে অন্তত ৭৫ বাংলাদেশিকে আটকের সংবাদ পাওয়া গেছে। এরা সবাই অবৈধ অভিবাসী হলেও গুরুতর কোন অকর্মে লিপ্ত ছিলেন না। অথচ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাচনী অঙ্গিকার ছিল কেবলমাত্র গুরুতর অপরাধী অবৈধ অভিবাসীদেরকেই গ্রেফতার ও বহিস্কারের।
খ্যাতনামা অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী বৃহস্প্রতিবার জানান, প্রতিদিনই অনেক মানুষকে গ্রেফতারের সাথে বাংলাদেশীদের গ্রেফতারের তথ্যও শুনতে পাচ্ছি। গ্রেফতার হওয়া প্রবাসীদের স্বজনেরা ফোন করে আইনগত সহায়তা চাচ্ছেন। এ অবস্থায় গোটা কমিউনিটিতে সন্ত্রস্ত্র এবং হতাশা বিরাজ করছে।
অ্যাটর্নি মঈন উল্লেখ করেন, অনেক আগেই বহিষ্কারের আদেশ জারি হয়েছে এমন ব্যক্তিরাই টার্গেটে পরিণত। বাফেলোর একজন নির্মাণ শ্রমিককে কর্মস্থল থেকে গ্রেফতারের সংবাদ পেলাম। তিনি বেশ ক’বছর আগে কানাডা থেকে দুর্গম সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছিলেন। কলরাডো ডিটেনশন সেন্টারে নেয়া হয়েছে আরেকজনকে। তার নিযুক্ত অ্যাটর্নিকে খুঁজে না পেয়ে আমাকে ফোন করেছেন সহায়তার জন্যে। অথচ আমি তার ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে কিছুই জানি না। ফ্লোরিডা, জর্জিয়াসহ নিউইয়র্কে ধরপাকড়ের শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা। চেষ্টা করছি সর্বান্তকরণে।
অ্যাটর্নি মঈন আরো বললেন, পূর্বনির্ধারিত তারিখে ইমিগ্রেশন কোর্ট অথবা অফিসে হাজিরা দিতে গিয়ে এখন অনেক মানুষ আটক হচ্ছেন। এটা অকল্পনীয় ঘটনা-যা সামগ্রিক পরিস্থিতিকে অচেনা করে ফেলেছে। কারণ, বিদ্যমান আইনেই তারা প্যারলে মুক্ত থেকে আইনী প্রক্রিয়ায় রয়েছেন। অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এমন পদক্ষেপে আইনের শাসন চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ২০ জানুয়ারি থেকে এ যাবত ৭০ হাজারের মত অবৈধ অভিবাসীকে নিজ নিজ দেশে ফেরৎ এবং আরো ৪৮ হাজারের মত বহিষ্কারের প্রক্রিয়ায় রয়েছে আইস (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এ্যানফোর্সমেন্ট)। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসী গ্রেফতার অভিযানের দৈনিক টার্গেট ধার্য করে দিয়েছেন ৩ হাজার। আর এই টার্গেট পূরণেই মরিয়া হয়ে উঠেছে আইসের এজেন্টরা।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল