ভাষাগত সমস্যার কারণে অভিবাসী সমাজের অনেকেই ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ধর্মীয়, জাতিগত এবং বর্ণ বিদ্বেষমূলক হামলা নির্ণয়ে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ অব্যাহত রয়েছে। জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের ভেতরে নামাজরত মুসল্লীদের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া দুর্বৃত্তকে হেইট ক্রাইমের অপরাধী সাব্যস্ত না করায় উগ্রপন্থিরা আস্কারা পেয়ে যাচ্ছে। অভিবাসীদের গড়া এই নিউইয়র্ক সিটির সবচেয়ে বেশি ভাষা-ভাষী মানুষের বরো কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট এটর্নী নির্বাচনে ৭ প্রার্থীর টাউন হল মিটিংয়ে এমন উদ্বেগজনক তথ্য উদঘাটিত হয় প্রার্থীগণের মন্তব্যে। এ সময় প্রার্থীরা অঙ্গীকার করেন যে, ডিস্ট্রিক্ট এটর্নী হিসেবে জয়ী হলে এমন পরিস্থিতির অবসান ঘটানো হবে। বিচার নিয়ে প্রহসন চলতে দেয়া হবে না কিংবা মামলার অভিযোগ গঠনেও পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণের অবকাশ থাকবে না। জাতিগত অথবা ধর্মীয় কারণে বৈষম্যের শিকার যাতে কেউ না হয় সে দিকে মনোযোগ থাকবে।
প্রার্থীরা আরো অঙ্গীকার করেছেন যে, অভিবাসনের মর্যাদাহীনদের মধ্যে যারা অন্য কোন অপরাধ করেননি তাদের সুরক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ট্রাম্পের লেলিয়ে দেয়া আইস (ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) কে আদালত চত্বরে নিষিদ্ধ করা হবে। জোর করে আইসের এজেন্টরা যদি আদালত প্রাঙ্গনে প্রবেশ করে তাহলে তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে। একইভাবে হাসপাতাল, স্কুল প্রাঙ্গনেও অভিবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
কুইন্সের মুসলিম সম্প্রদায়ের মত জুইশ, খ্রিস্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ সকলের নিরাপত্তায় গৃহীত পদক্ষেপ জোরদার করা হবে। মসজিদ, মন্দির, সিনেগগ অথবা গির্জায় নজরদারি থাকবে না। প্রার্থীরা আরো উল্লেখ করেন যে, নতুন কারাগারের প্রয়োজন নেই। অপরাধে লিপ্তদের কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সুপথে আনতে পারলে কারাগারের সমস্যা আর থাকবে না। তারা আরো উল্লেখ করেন, পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য হওয়া নারীকে কারাগারে রাখার প্রয়োজন নেই। যারা এদেরকে বাধ্য করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি আরোপ করলেই এ সমস্যার অবসান ঘটবে। আর্থিক কারণে যে সব তরুণী পতিতাবৃত্তিতে লিপ্ত হয়েছে তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ব্যবস্থা করতে হবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করলেই পতিতাবৃত্তির প্রয়োজন হবে না।
২৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে এ নির্বাচন। দীর্ঘ ২৮ বছর পর বর্তমান ডিস্ট্রিক্ট এটর্নী রিচার্ড এ ব্রাউন অবসরে যাবেন। এজন্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশেষ এ নির্বাচন।
রবিবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসে বেলজিনো পার্টি হলে অনুষ্ঠিত এ টাউন হল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেন ডিস্ট্রিক্ট এটর্নী প্রার্থী মেলিন্ডা কাটজ, টিফানি স্যাবন, ররি ল্যাঙ্কম্যান, গ্রেগরী ল্যাসাক, বেটি লুগো, হোযে নিভেস এবং মিনা মালিক।
‘ক্ইুন্স ডিস্ট্রিক্ট এটর্নী ক্যান্ডিডেট ফোরাম’ শিরোনামে এ মিটিংয়ের আয়োজন করে ছায়া সিডিসি, ড্রাম সেতু, কেসিএস, কমিউনিটি হেলথ সেন্টার, সিএএএভি, নিউইয়র্ক ইমিগ্রেশন কোয়ালিশন, মিঙ্কউন সেন্টার, ফেইথ নিউইয়র্ক, ক্যারিবিয়েন, এসএজিএসএস প্রভৃতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সর্বস্তরের প্রতিনিধিত্বকারি বিপুলসংখ্যক আমেরিকানের সমাগম ঘটে এ মিটিংয়ে।
বিডি-প্রতিদিন/০৬ মে, ২০১৯/মাহবুব