ফোবানার নেতৃত্বে ফেডারেল ক্রিমিনালদের (গুরুতর অপরাধী) রাখতেও দ্বিধা করছেন না কমিউনিটি লিডার হিসেবে পরিচিতদের কেউ কেউ-এমন অভিযোগ সর্বত্র নানা গুঞ্জন সৃষ্টি করেছে। গুরুতর অপরাধ তথা প্রতারণা, দুর্নীতি, জালিয়াতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেল খেঁটেছেন এমন লোকজনের ফোবানা (ফেডারেশন অব বাংলাদেশি এসোসিয়েশন্স ইন নর্থ আমেরিকা)’র নির্বাহী পরিষদে প্রার্থীতা নিয়ে এমন প্রশ্নের অবতারণা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ফোবানার একাংশের গঠনতন্ত্র এবং সাংগঠনিক রীতি সংশোধনী বিষয়ক সাব-কমিটির চেয়ারপার্সন জাহিদ হোসেন পিন্টু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, বিষয়টি সত্যিই বিব্রতকর। এ ব্যাপারে গঠনতন্ত্রে একটি সংশোধনীর প্রস্তাব রয়েছে। আটলান্টা কমিউনিটির লিডার ডা. মোহাম্মদ আলী মানিকসহ বেশ ক’জন এর পক্ষে থাকলেও রহস্যজনক কারণে কেউ কেউ সাপোর্ট দিচ্ছেন না। তবে প্রস্তাবটি এখনও সক্রিয় রয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে ২৯ নভেম্বরের সাধারণ সভায় বিষয়টির ফয়সালা হবে। এই ফেডারেশনের সার্বিক স্বার্থেই এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন। তাহলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে মনোনয়নপত্র বাছাই করাও সহজ হবে।
এর আগে ফোবানার প্রধান নির্বাচন কমিশনার মাহবুব রেজা রহিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, গঠনতন্ত্রে কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকায় আমরা কারো মনোনয়নই (গুরুতর অপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত, দোষ স্বীকার, জেল খাটা ও জরিমানা পরিশোধ করা) বাছাইয়ের সময় বাতিলের ক্ষমতা পাইনি। এমন বিধি প্রনয়ণের দায়িত্ব ফোবানার নির্বাহী কমিটি অথবা সাধারণ সদস্যগণের বার্ষিক সভার।
ফোবানা হচ্ছে উত্তর আমেরিকায় প্রবাসীদের সর্ববৃহৎ একটি মিলনমেলার নাম। নেতৃত্ব নিয়ে বাক-বিতণ্ডা, বিবাদ-বিভক্তি থাকলেও এর বিশেষ একটি মর্যাদা রয়েছে। ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ফেডারেশনের ইমেজ উজ্জ্বল থাকার অর্থ হচ্ছে নতুন প্রজন্মে বাংলাদেশ, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ তৈরী হওয়া। কিন্তু সেই সংগঠনের নেতৃত্বে যদি গুরুতর অপরাধীদের ঠাঁই হয়, তাহলে এটি প্রতিষ্ঠার সংকল্প মাঠে মারা যেতে বাধ্য-এমন কথা বলছেন সাধারণ প্রবাসীরা। সামনের নির্বাচনের আগেই যাতে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট একটি সিদ্ধান্ত হয় এবং সে আলোকে নির্বাহী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা হয়-সে অনুরোধও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের।
উল্লেখ্য, ২৯ নভেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভার পরই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যেই মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও বাছাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিভিন্ন পদে ৫৩ জন লড়ছেন বলে জানা গেছে। স্মরণ করা যেতে পারে, গত ক’বছর ধরেই ফোবানার বিভক্ত সম্মেলন হচ্ছে। দুটি কমিটিও রয়েছে। অর্থাৎ অনৈক্যের বেড়াজালে ফোবানার প্রত্যাশা পূরণ হওয়া দূরের কথা, অনেকেই হতাশ হয়েছেন। এমনি অবস্থায় আদালত কর্তৃক দন্ডিতরা যদি নেতৃত্বে আসে তাহলে সাধারণ প্রবাসীরা আরো হতাশ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন