শনিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
ভ্রমণ

বিধবা নারীদের ভরসা মরিয়ম বুবু

শনিবারের সকাল ডেস্ক

বিধবা নারীদের ভরসা মরিয়ম বুবু

বেকার ও বিধবা নারীদের আলোর দিশারী মরিয়ম বুবু। অসহায় নারীদের জন্য তিনি খুলেছেন মহিলা উন্নয়ন সমিতি। সমিতিতে সদস্য সংখ্যা তিনশ। সবাই মিলে চলছে বেঁচে থাকার লড়াই। দূর-দূরান্ত থেকে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই আসছেন তার কাছে শুধু কাজের আশায়। তাই সবাই কষ্ট করে কিছু শিখে যদি আয় বাড়ানো যায়! এমন ভাবনা থেকেই মরিয়ম বুবুর কাছে আসেন অনেক দরিদ্র মানুষ। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মরিয়ম বুবু।

 

মাত্র ১৫ বছর বয়সে দর্জি দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। দুজনের বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের আস্করনগর বানিয়াটারী গ্রামে। দরিদ্র স্বামীর সংসারে টানাটানি লেগেই ছিল। সংসারের দৈন্যতা দেখে স্বামীর কাছ  থেকে দর্জির কাজ শিখে নেন মরিয়ম বেগম। প্রশিক্ষণ নেন আধুনিক পোশাক তৈরির কলা- কৌশলে। হয়ে ওঠেন দক্ষ প্রশিক্ষক। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তার নাম। ২০০৬ সালে গড়ে তোলেন ‘আস্করনগর বানিয়াটারী মহিলা উন্নয়ন সমিতি’। তাদের পাশে সহায়তার হাত বাড়ায় সরকারি সেবা সংগঠনগুলো। উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদফতর ও উপজেলা সমবায় অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশন পান। গরিব ও বিধবা নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণসহ ১৬ ধরনের কুটির শিল্পের প্রশিক্ষণ দেন। তিনি সেলাই প্রশিক্ষণসহ টেইলারিং, ব্লক বাটিক, এমব্রয়েডারি, কাটচুপি, বাঁশের তৈরি মোড়া, কার্পেট, পুঁতির ভ্যানিটি ব্যাগ, পার্সব্যাগ, শোপিস, বেতের শীতল পাটি, হাতপাখা, প্যান্ট, শার্ট, বোরকা, লেহেঙ্গা, কামিজ, পাজামা, সাফারি শার্ট, রাজকোট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া তৈরিতে সহায়তা করেন। পরবর্তীতে কাটিং মাস্টার হিসেবে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।

 

তার এ কর্মকান্ডের ফলে ২০১৪ সালে নাগেশ্বরী উপজেলা প্রশাসন তাকে ‘জয়িতা সম্মাননা’ দেন। ২০১৫ সালে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত স্বামী মারা গেলে নারীদের আর্থিক উন্নয়নে সহযোগিতা করার জন্য  বেরিয়ে পড়েন তিনি। মরিয়ম বেগম বর্তমানে লালমনিরহাট, দিনাজপুর, রাজশাহী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং ও লিফলেটের মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে কয়েক হাজার তরুণী ও যুবতী ট্রেইনার হিসেবে  সেলাই প্রশিক্ষণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর