শেষ পর্যন্ত হোয়াইটওয়াশ হয়েই গেল বাংলাদেশ দল। প্রথম দুই ম্যাচে হেরে সিরিজ হাত ছাড়া হয়ে গিয়েছিল আগেই। গতকাল ছিল লজ্জা থেকে বাঁচার ম্যাচ। সেই ম্যাচেও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১২২ রানের বড় ব্যবধানে হেরে ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করল তামিমরা। লজ্জায় শেষ হলো সিরিজ।
প্রথমে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কা করেছিল ২৯৪ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৭২ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।
প্রথম দুই ম্যাচের মতো শেষ ম্যাচেও হতাশার ছবি।
ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং-তিন বিভাগেই ছন্ন ছাড়া লাল সবুজরা। তবে এমন হতাশার দিনেও খানিকটা উজ্জ্বল ছিলেন সৌম্য সরকার। বল হাতে ৩ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতেও খেলেছেন ৬৯ রানের ইনিংস। এছাড়া দলের অন্যদের পারফরম্যান্স ছিল যাচ্ছেতাই।
সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। ক্রিকেটে বাজে সময় আসেই। তাই বলে এতটা পরিস্থিতির সম্মুখীন বাংলাদেশ আগে কখনো হয়েছে কিনা?
শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটাররা যখন ব্যাটিং করছেন তখন মনে হচ্ছিল উইকেট ‘ব্যাটিং স্বর্গ’! এমন উইকেটে বোলারদের কিইবা করার আছে? কিন্তু বাংলাদেশ যখন ব্যাট করছে তখন আবার উল্টো দাপট দেখাচ্ছিলেন লঙ্কান বোলাররা। তবে এমন উইকেটে যে নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে যেকোনো বোলার কিংবা ব্যাটসম্যানের পক্ষে ভালো করা সম্ভব তা তো দেখিয়ে দিয়েছেন সৌম্য ও তাইজুল।
নিয়মিত বোলাররা যেখানে রীতিমতো ব্যর্থ সেখানে ‘পার্টটাইমার’ সৌম্য সরকার কিনা একাই নিয়েছেন ৩ উইকেট। গতকাল স্লোক ওভারেও বল করতে হয়েছে তাকে। ‘বুদ্ধিমত্তা’ দিয়ে শেষ ওভারেও কী দারুণ বোলিং করেছেন। সেখানে পাত্তাই পেলেন না নিয়মিত বোলাররা!
উইকেটে যে কোনো জু জু ছিল না তা দেখিয়ে দিয়েছেন ৮ নম্বরে ব্যাট করতে নামা তাইজুল ইসলাম। যেখানে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা একেবারে ব্যর্থ, সেখানে তিনি ২৮ বল মোকাবিলায় খেলেছেন ৩৯ রানের হার না মানা ইনিংস।
এই ম্যাচেও ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসতে পারেননি ওপেনার তামিম ইকবাল। আউট হয়েছেন মাত্র ২ রান করে। পুরো সিরিজে ব্যর্থতায় ড্যাসিং ওপেনার নিজেও যেমন ডুবছেন, তেমনি নেতৃত্ব দিয়ে ডুবিয়েছেন দলকেও।
বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর তবু প্রাপ্তির অনেক জায়গা ছিল। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে লজ্জার হারের পর যেন বলার মতো কোনো কিছুই নেই! ব্যর্থ ভারপ্রাপ্ত কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনও। স্টিভ রোডসকে বিদায় করে দেওয়ার পর তার কাঁধে দায়িত্ব দিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। কিন্তু বিসিবির আস্থার ন্যূনতম প্রতিদানও দিতে পারেননি তিনি।
সিরিজের মাঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, শ্রীলঙ্কায় ক্যাসিনোতে ব্যস্ত ভারপ্রাপ্ত কোচ! যে দলের কোচ এমন উদাসীন সে দল আর কতই বা ভালো করবে?
তবে বাংলাদেশের জন্য ব্যর্থতার মিশন হলেও শ্রীলঙ্কার জন্য এটি স্মরণীয় এক সিরিজ। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে বিদায় নিয়েছেন তাদের সেরা বোলার লাসিথ মালিঙ্গা। আর শেষ ম্যাচে ক্রিকেটকে গুডবাই জানিয়েছেন আরেক তারকা পেসার নুয়ান কুলাসেকারা। লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিল শেষ ম্যাচটি তারা কুলাসেকারাকে উৎসর্গ করবে। করলেনও। তবে আবেগের এই ম্যাচেও উড়ন্ত জয় দিয়ে শেষ করে অবিস্মরণীয় করে রাখল শ্রীলঙ্কা।