মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

ব্যবধান ৩-০ নাকি ২-১

আসিফ ইকবাল

ব্যবধান ৩-০ নাকি ২-১

মিরপুর স্টেডিয়ামের ঢোকার মুখে উৎসুক জনতার জটলা। শুরুতে বুঝা যায়নি। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্রিকেটপ্রেমীরা জটলা বেঁধে কাটাছেঁড়া করছেন সিরিজের তৃতীয় ম্যাচের ফল কী হতে পারে? সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে আত্মবিশ্বাসের চূড়ায় থাকা বাংলাদেশ ক্রিকেট দল কী পারবে জিততে? পারবে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দিতে জশ বাটলারের ইংল্যান্ডকে? না, শেষ ম্যাচ জিতে মান বাঁচাবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। আজকের ম্যাচের আগাম ফল নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীরা আত্মবিশ্বাসী। সাকিব বাহিনী কী আত্মবিশ্বাসী? সাকিবরা যদি আজ জিতে যান, তাহলে এই প্রথম নিজেদের টি-২০ ক্রিকেট ইতিহাসে কোনো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দেবে বাংলাদেশ। অবশ্য ইংল্যান্ড ছাড়া আরও দুই টি-২০ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের রেকর্ড রয়েছে টাইগারদের।

ওয়ানডে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড জিতেছে ওয়ানডে সিরিজ। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুটি জিতে সিরিজ নিশ্চিত করে ইংলিশরা। চট্টগ্রামে শেষ ওয়ানডে জিতে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামে টি-২০ সিরিজের প্রথমটিতে ৬ উইকেটের জয় পায় নাজমুল হোসেন শান্তের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে। শান্ত ৫১ রানের সুনামী ইনিংস খেলেন মাত্র ৩০ বলে। দ্বিতীয় টি-২০ জিতে নেয় ৪ উইকেটে। ম্যাচটি জেতে মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে। মিরাজের স্পেল ৪-০-১২-৪! ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং-দুই ম্যাচের তিন বিভাগের কোনোটিতেই বাটলার বাহিনীকে পাত্তা দেননি সাকিবরা।  

শেষ ওয়ানডে জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে টি-২০ সিরিজে খেলতে নামে বাংলাদেশ। সাকিবের নেতৃত্বে তরুণ ক্রিকেটাররা মেলে ধরেন নিজেদের। দলে টাইগার অধিনায়ক সাকিব ছাড়া আর কোনো সিনিয়র ক্রিকেটার নেই। এক ঝাঁক তরুণ ক্রিকেটার নিয়ে স্বপ্নের ক্রিকেট খেলছে সাকিব বাহিনী। অবশ্য অধিনায়ক সাকিবকে পেছন থেকে সহায়তা করছেন হেড কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহে। শ্রীলঙ্কান বংশোদ্ভুত হাতুরাসিংহে থিংক ট্যাঙ্কার হিসেবে পেছন থেকে কাজ করছেন। নতুন করে দায়িত্ব নেওয়ার পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ হাতুরার প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট। ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে ২-১ ব্যবধানে। কিন্তু ওই সিরিজেই তিনি তামিম বাহিনীকে গুছিয়ে দিয়েছেন। বদলে দিয়েছেন মানসিকতা। তৈরি করে দিয়েছেন লড়াকু মেজাজ। ওয়ানডে হারলেও টি-২০ সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। সাকিবসহ গোটা দলকে তিনি আত্মবিশ্বাসের চূড়ায় টেনে তুলেছেন তার ক্রিকেটীয় মেধা দিয়ে। ক্রিকেটারদের নিজেদের মেলে ধরার পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন, যাতে আত্মবিশ্বাসী ক্রিকেট খেলতে পারেন। খেলছেনও নাজমুল শান্ত, রনি তালুকদার, তৌহিদ হৃদয়, মেহেদী মিরাজ, লিটন দাস, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদরা। হাতুরাসিংহের ফ্রি খেলার টনিকে দুর্দান্ত খেলছেন নাজমুল শান্ত। ছন্দে থাকা শান্ত প্রথম ম্যাচে ৫১ ও দ্বিতীয় ম্যাচে অপরাজিত ছিলেন ৪৬ রানে। সাকিব ব্যাট ও বল হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়ে সাবলীল স্ট্রোক খেলছেন তৌহিদ। প্রথম ম্যাচে ১৭ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় ২৪ ও দ্বিতীয় ম্যাচে ১৮ বলে ১৭ রান করেন। ৮ বছর পর জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েই নিজেকে মেলে ধরেছেন রনি। প্রথম টি-২০ ম্যাচে ১৪ বলে ৪ চারে ২১ ও দ্বিতীয় ম্যাচে ১৪ বলে এক চারে ৯ রান করেন। বড় ইনিংস খেলতে পারছেন না লিটন। কিন্তু শুরুটা চমৎকার করছেন। সব মিলিয়ে ক্রিকেটাররা একটি দল হয়ে খেলছেন।

বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ১১টি টি-২০ সিরিজ জিতেছে। এর মধ্যে দুই বা ততোধিক ম্যাচের সিরিজ জিতেছে ছয়বার। ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডকে ৩-০, ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২-১, ২০২০ সালে জিম্বাবুয়েকে ২-০, ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১, নিউজিল্যান্ডকে ৩-২ এবং ২০২২ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়েছে ২-০ ব্যবধানে। বাকি পাঁচটি সিরিজ জিতেছে এক ম্যাচের।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর