বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের কালজয়ী ইংরেজি ছোটগল্প সুলতানা'স ড্রিমের বাংলা নাট্যরূপ সুলতানার স্বপ্ন মঞ্চায়ন করেছে আইইউবি থিয়েটার। বুধবার (১৯ নভেম্বর) ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) অডিটরিয়ামে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। এটি ছিলো আইইউবি থিয়েটারের ২৪তম প্রযোজনা। গল্পটির বাংলা নাট্যরূপ এবং নির্দেশনা দিয়েছেন স্বপ্লীল সোহেল।
বাংলাদেশে নারী অধিকার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের লেখা ইংরেজি ছোটগল্প সুলতানা’স ড্রিম প্রথম প্রকাশিত হয়েছিলো ১৯০৫ সালে, ভারতের মাদ্রাজ থেকে প্রকাশিত (বর্তমানে চেন্নাই) দা ইন্ডিয়ান লেডিজ ম্যাগাজিনে। এই গল্পে তিনি ‘লেডিল্যান্ড’ নামের একটি কল্পিত সমাজে নারী-সমতার স্বপ্ন তুলে ধরেছেন।
বেগম রোকেয়ার চরিত্রে অভিনয় করা কিরণ সরকার জুঁই বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে আমরা সবাই মিলে কাজ করেছি – অভিনয়, মঞ্চ, আলো, সাউন্ড, কস্টিউম, সবকিছু নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হয়েছে আমাদের। কাজ করতে গিয়ে বুঝেছি, বেগম রোকেয়ার স্বপ্নের দুনিয়া কেমন ছিলো তা আজকের সময়েও আমাদের জন্য বোঝা জরুরি। আমাদের মতো তরুণদের জন্য এই গল্পটা শুধু একটা নাটক নয়, সমতার ভাবনাকে নিয়ে নতুন আলোয় দেখার একটা সুযোগ।’
আইইউবি থিয়েটারের সমন্বয়ক এবং মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগে প্রভাষক মমতাজ পারভীন মুমু বলেন, ‘ছোটগল্পকে নাট্যরূপ দেয়ার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল লিখিত বর্ণনাকে দৃশ্য, সংলাপ ও মঞ্চ-ক্রিয়ার মাধ্যমে তুলে ধরা। সময়ের সীমাবদ্ধতার কারণে কিছু চরিত্র ও ঘটনা সংক্ষেপ করতে হয়েছে। স্বপ্নময় ও কল্পনাধর্মী দুনিয়া মঞ্চে ফুটিয়ে তুলতে আলোকসজ্জা, সেট ও সাউন্ডের সমন্বয় প্রয়োজন হয়েছে। তবু আমরা চেষ্টা করেছি মূল রচনার সারমর্ম ধরে রেখে দর্শকদের জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা তৈরি করতে।’
উপাচার্য অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, ‘শিক্ষার অধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক কাঠামো নিয়ে যেসব প্রশ্ন বেগম রোকেয়া তুলেছিলেন, সময়ের ব্যবধান সত্ত্বেও সেসব প্রশ্ন এখনো সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। গল্পটিকে আবারও আলোচনায় ফিরিয়ে আনতে এই মঞ্চায়ন ভূমিকা রাখবে। গুরুত্বপূর্ণ এই সাহ্যিকর্মটিকে মঞ্চে উপস্থাপন করার দুরূহ কাজটি চমৎকারভাবে সম্পাদন করায় আইইউবি থিয়েটারের সদস্যদের অভিনন্দন।’
আইইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান দিদার এ. হোসেইন এবং কোষাধ্যক্ষ খন্দকার ইফতেখার হায়দারসহ আইইউবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা এবং বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও আইইউবিতে এসেছিলেন নাটকটি উপভোগ করতে।
সুলতানার স্বপ্নে আরও যারা অভিনয় করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন- সাদিয়া আফরিন অর্না, সুমাইয়া ইমা, ফারজানা আক্তার, সুনিতা সাহা, সানজিদা মাহাবুব কাব্য, জয় সাহা, রিশাদ হাসান প্রমিত, তাহমিদ তামজিদ আযান সিকদার, রিফাত হাসান, হাসিবুর রহমান হাসিব, আহমেদ ইয়াশফিন সামি, নূরে মুক্তাদির আজমীর, আফরিনা রহমান, নুজহাত তাবাসসুম, কাফিনূর আজিজ বর্ণ, রকিবুল হাসান রানা, মেহেদী হাসান আকাশ, মো. তৌহিদুল ইসলাম, সৌহার্দ্য পাল, মাইশা রহমান, তাবাসসুম, ইভা, নুসরাত, এস. এম. সাকিল আমিন, মো. সামিউল ইসলাম।
নেপথ্যে ছিলেন মো. তৌহিদুল ইসলাম (সহ-নির্দেশক), রিশাদ হাসান প্রমিত (প্রযোজনা অধিকর্তা), মো. আজমাল মাহির (সহ-প্রযোজনা অধিকর্তা, প্রপস), সৌহার্দ্য পাল (আলোক নির্দেশনা), নুজহাত তাবাসসুম (সহ-প্রযোজনা অধিকর্তা, পোস্টার ডিজাইনার, মুখোশ নির্মাতা, পোশাক পরিকল্পনা), শুভাশিস দত্ত তন্ময় (রূপসজ্জা), সঙ্গীত (অর্নব, এস. এম. শাকিল আমিন, মেহেদী হাসান আকাশ); তাহমিদ তামজিদ আযান সিকদার (সেট) এবং সাদিয়া আফরিন অর্ণা (কোরিওগ্রাফি)।
বিডি-প্রতিদিন/জামশেদ