বাংলাদেশের ষোলকোটি মানুষ যখন আনন্দে উদ্বেল তখন বিমর্ষ ভারতীয় শিবির। জয় মানে আনন্দ, তবে এ জয় যেন তার চেয়ে বড় কিছু। সেই বিশ্বকাপের পর থেকে এ দিনটির অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশের মানুষ। বিশ্বকাপে আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে ভারতের কাছে পরাজয় বরণ করে দেশে ফিরতে হয়েছিল টাইগারদের। তাই বাঘা সন্তানদের সত্যিকারের সক্ষমতা ধোনি বাহিনীর পাশাপাশি বিশ্ববাসীকে দেখাতে এই দিনটিরই যেন প্রতীক্ষা ছিল। অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান হলো। মিরপুরের মাটিতে বড় ব্যবধানে সফররত ভারতের পূর্ণশক্তির টিমকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেই দিনটিই যেন মনে করিয়ে দিল টাইগাররা।
বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা দলটি যে এভাবে বাংলাদেশের কাছে হারবে সেটা হয়তো ভারতের কেউ চিন্তাই করেনি। সবাই ভেবেছিল, বাংলাদেশের বিপক্ষে র্যাংকিংয়ের ২ নম্বরে থাকা ভারত অন্তত লড়াই করবে, তাদের বিপক্ষে জয় পেতে খানিকটা হলেও বেগ পেতে হবে বাংলাদেশকে। এমনকি প্রাকটিসের সময় ভারতীয় ক্রিকেট দলের হাসিখুশি মুখ তাদের অধিক আত্মবিশ্বাসেরই জানান দিয়েছিল। কিন্তু সেই হাসি মিলিয়ে গেল নিমিষে। বলতে গেলে সব বিভাগে আধিপত্য বিস্তার করেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ। তাই ম্যাচ শেষে বাংলাদেশকে কৃতিত্ব দিয়েছেন বিধ্বস্ত ধোনি।
তিনি বলেন, 'হ্যাঁ, এটা হতাশাজনক। তবে বাংলাদেশ সত্যিই দারুণ ক্রিকেট খেলেছে। প্রথম বল থেকেই তারা আমাদের বোলারদের উপর চড়াও হয়ে খেলেছে। বৃষ্টি আমাদের কিছুটা সাহায্য করেছে। তবে তারা যেভাবে শুরু করেছিল তাতে মনে হয়েছিল ৩৩০ রানের বেশি হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা তাদের ৩০৭ রানে আটকে রাখতে সক্ষম হয়েছি। তবে আমাদের ব্যাটিংটা ঠিক তেমনটি হয়নি যেমনটি আমরা চেয়েছি।'
দলের স্পিন বোলারদের প্রশংসা করে ধোনি বলেন, 'স্পিনাররা ভালো বল করেছে। রায়নার অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তবে ফাস্ট বোলাররা হতাশ করেছে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ফাস্ট বোলারদের ভালোভাবেই খেলেছে।'
বাংলাদেশের বোলারদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের ফাস্ট বোলাররা যেভাবে বল করেছে তাতে আমি রীতিমতো মুগ্ধ। তারা কেউ ১৪০ কি.মি. গতিতে বল করেনি। কিন্তু তারা দারুণ লাইন ও লেন্থ বজায় রেখে বল করেছে। বিশ্বকাপে ফাস্ট বোলারদের কারণে তারা অনেক ভালো করেছে। সে কারণে আজকের ম্যাচে তারা বেশি ফাস্ট বোলার নিয়েছে বলে বিস্মিত হইনি। তাদের দলে সাকিব আল হাসানের মতো খেলোয়াড় রয়েছে, যে দলের প্রয়োজনে যে কোনো মুহূর্তে বল করতে পারে। সর্বোপরি আমাদেরকে নতুন করে পরিকল্পনা করে বাংলাদেশকে হারানোর পথ খুঁজে বের করতে হবে।'
বিডি-প্রতিদিন/১৯ জুন ২০১৫/ এস আহমেদ