না ফেরার দেশে চলে গেলেন শচীন টেন্ডুলকার, বিনোদ কাম্বলিদের ছোবেলার কোচ রমাকান্ত আচরেকর।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে ভারতের মুম্বাইতে নিজের বাসভবনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই ক্রিকেট কোচ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি। শেষ কয়েকদিন ধরেই তার শারীরিক অবস্থারও অবনতি হয়েছিল।
১৯৩২ সালের ২ জানুয়ারি মুম্বাইয়ের মালভান-এ জন্মগ্রহণ করেন রমাকান্ত আচরেকর। শুধু ক্রিকেট কোচ হিসাবে সুখ্যাতি পাননি তিনি, ১৯৪৩ সালে তিনি ক্রিকেট খেলা শুরু করেন। ১৯৪৫ সালে নিউ হিন্দ স্পোর্টস ক্লাবে হয়ে ক্লাব ক্রিকেট খেলেন তিনি। এরপর মুম্বাইয়ের একাধিক ক্লাবে ক্রিকেট খেলতেন রমাকান্ত। ভারতীয় ক্রিকেটে বিশেষ অবদানের কারণে ১৯৯০ ‘দ্রোণাচার্য’ পুরস্কারে ভূষিত হন রমাকান্ত। ২০১০ সালে ভারত সরকার তাকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে সম্মানিত করে। ওই একই বছরে ‘লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট’ সম্মাননা পান রমাকান্ত আচরেকর, তাকে সেই পুরস্কার তুলে দেন ভারতের তৎকালীন ক্রিকেট কোচ গ্যারি কার্স্টেন। ১৯৯০ সালে তিনি প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হন। ২০১৩ সালে স্ট্রোক হওয়ার পর থেকেই গত কয়েক বছর থেকেই তিনি অসুস্থ।
শচীন টেন্ডুলকার ও রমাকান্ত আচরেকর ছিলেন একই আত্মায় বাঁধা। শচীনের জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তেই রমাকান্ত আদর্শ গুরুর মতো ছাত্রের পাশে ছিলেন। নিজের স্কুটারে করে শচীনকে চাপিয়ে ম্যাচ খেলাতে নিয়ে যেতেন রমাকান্ত। আসলে ছোটবেলা থেকেই শচীনের মধ্যে ভবিষ্যতের তারকা হয়ে ওঠার সমস্ত সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছিলেন রমাকান্ত। শচীনও কখনও গুরুর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে কার্পণ্য করেননি। প্রতি বছরটই শিক্ষক দিবসে নিয়ম করে হাজির হয়েছেন প্রিয় গুরুর বাড়িতে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রিয় কোচের এই চলে যাওয়া শচীনের জীবনে বড় শূণ্যস্থান তৈরি করে দিয়ে গেল।
তবে শচীন-কাম্বলিই নয়, অজিত আগরকার, চন্দ্রকান্ত পন্ডিত, প্রবীণ আমরে, রমেশ পাওয়ার, বলবিন্দর সান্ধু, সঞ্জয় বাঙ্গারের মতো ভারতীয় ক্রিকেটের নক্ষত্রদেরও ছোটবেলার কোচ ছিলেন রমাকান্ত। মুম্বাইয়ের দাদর-এলাকার শিবাজি পার্কে কামাথ মেমোরিয়াল ক্রিকেট ক্লাব-এ তাঁর কোচিংয়েই একাধিক প্রথম সারির ক্রিকেটার উঠে এসেছেন।
তার প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড বা বিসিসিআই, শচীন, মুহাম্মদ কাইফ, আর.পি.সিং সহ ক্রিকেটাররা।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন