বরিশাল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ৪ দিনের ম্যাচটি ড্র হয়েছে। ম্যাচের প্রথম দুই দিন বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল। মঙ্গলবার চতুর্থ দিনে বিকেল ৫টায় দুই আম্পায়ার বেল তুলে নেয়ার আগে শেষ বলটি পর্যন্ত ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় খেলা উপভোগ করেন হাজার হাজার দর্শক। ম্যাচ ড্র হলেও দুই দলের ব্যাটিং-বোলিং দেখে মুগ্ধ বরিশালের ক্রিকেটপ্রেমীরা।
তৃতীয় দিনে সংগ্রহ করা ৩ উইকেটে ১৫৫ রান নিয়ে আজ চতুর্থ দিনে মাঠে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে শ্রীলংকা। ৭৪ ওভারে ৬ উইকেটে ২৯২ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় তারা। মধ্যাহ্ন বিরতির পর মাঠে ফিরে দুপুর ২টার দিকে ৮৪.৩ ওভারে ৭ উইকেটে ৩৩১ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেন শ্রীলংকান অধিনায়ক নিপুর ধনাঞ্জয়া।
দলের পক্ষে অধিনায়ক নিপুন ১১২ বলে ৩টি ছয় ও ৬টি চারের সাহায্যে সর্বোচ্চ ৬৭ রান, মিডল অর্ডার ব্যাটস্ম্যান সোনাল দিনুশা ১১০ বলে ১টি ছয় ও ৭টি চারের সহায়তায় ৫৮ রান, দুনিথ ওয়ালেজ ৮৫ বলে ৫০, কাভিষকা গামেজ ৭৮ বলে ৪৬ রান, বিক্রমসিংহে ৫১ বলে ৪৫ রান এবং রভিন্দু রাসানাথ ৫৪ বলে ২১ রান করেন।
বাংলাদেশ দলের পক্ষে আশরাফুল ইসলাম সিয়াম ২৯ ওভারে ৬টি মেডেনসহ ৮৩ রানে ৩ উইকেট, আসাদুল্লাহ-আল গালিব ১৫ ওভারে ২টি মেডেন সহ ৪৬ রানে ২টি এবং নোমান চৌধুরী ১৪.৩ ওভারে ৩টি মেডেনসহ ৬৮ রানে ২টি উইকেট শিকার করেন।
জবাবে প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে প্রথম ওভারের ৪ বল মোকাবেলায় শূণ্য রানে সাঁজ ঘরে ফেরেন বাংলাদেশ দলের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান প্রান্তিক নওরোজ। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪৭ রান যোগ করেন সাজিদ হোসেন ও প্রীতম কুমার। ১২.৪ ওভারে দলীয় ৪৭ রানে ব্যক্তিগত ২৮ রানে সাঁজঘরে ফেরেন মিডল অর্ডার ব্যাটস্ম্যান প্রীতম। এরপর ১৭.৫ ওভারে দলীয় ৬৩ রানে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সাজিদ প্যাভেলিয়নে ফেরন ব্যক্তিগত ২৩ রানে। ৬৩ রান থেকে দলের স্কোর ৬৬ রান তুলতেই আরও দুটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েন বাংলাদেশী যুবরা। দলের দুঃসময়ে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ন হয়ে ৪৪.১তম ওভারে ১০০ বলে ১টি ছয় ও ৭টি চারের সাহায্যে ব্যক্তিগত ৫৪ রান করে ষষ্ঠ ব্যাটস্ম্যান হিসেবে সাঁজঘরে ফেরেন আলভী হক। দিনের বাকী সময়টা দেখেশুনে খেলে নাইমুর রহমান ৭৫ বলে ২৬ রান এবং ১৪ বলে ২ রান করে অপরাজিত থাকেন আশরাফুল ইসলাম। চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশী যুবাদের স্কোর ৪৮ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৫ রান।
শ্রীলংকা দলের পক্ষে মাথিসা পাথিরানা ৬.২ ওভারে ১টি মেডেন সহ ১৩ রানে ৩ উইকেট শিকার করে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন। এছাড়া কাভিসকা গামেজ ৬.৪ ওভারে ৩টি মেডেন সহ ১২ রানে ২ উইকেট এবং ডি মাদুসকা ৮ ওভারে ৩৪ রানে ১টি উইকেট শিকার করেন।
খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ম্যাচ রেফারী এএসএম রকিবুল হাসান বলেন, প্রথম ২ দিন পরত্যিক্ত হওয়ার পর তৃতীয় ও চতুর্থ দিনের খেলা শেষে ম্যাচ অমিমাংসিত ড্র হয়েছে। দুই দলই ব্যাটিং-বোলিংয়ে অসামান্য নৈপুন্য দেখিয়েছে। মাঠে হাজার হাজার দর্শকের উপস্থিতি তাদের ভালো লেগেছে। দর্শকদের প্রবল আগ্রহের কারণে বরিশালে আগামীতে আরও বড় বড় ম্যাচের আয়োজন হবে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক এএসএম রকিবুল হাসান।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল