পাকিস্তানের করাচিতে একটি পাঁচতলা আবাসিক ভবন ধসে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন। ভবনটির ধ্বংসস্তূপের নিচে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন আটকা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুক্রবার বিকালের দিকে করাচির লায়ারি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এই এলাকাটি করাচির পুরোনো শহর এলাকার (ওল্ড সিটি এরিয়া) অন্তর্ভুক্ত। ধসে পড়া ভবনটি লায়ারি’র শাইখা রোডে অবস্থিত।
পাকিস্তানের দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছেন তারা এবং রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভবনটির ধ্বংসস্তূপ থেকে পাঁচজন নারী, আটজন পুরুষ এবং ৭ বছর বয়সী একটি ছেলেশিশুর মরদেহ তারা উদ্ধার করতে পেরেছেন। ধ্বংসস্তূপের তলায় এখনও কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ জন চাপা পড়ে থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর ঘটনাস্থল এবং উদ্ধার তৎপরতা পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন করাচি’র মেয়র মুর্তাজা ওয়াহাব। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ধসে পড়া ভবনটি ১৯৭৪ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল এবং কয়েক বছর আগে ভবনটিকে ‘বিপজ্জনক’ বলে ঘোষণা করেছিল নগর প্রশাসন কর্তৃপক্ষ।
মেয়র মুর্তাজা ওয়াহাব আরও বলেন, “করাচির পুরোনো শহর এলাকায় ৪ শতাধিক ভবনকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে ঘোষণা করেছে নগর প্রশাসন কর্তৃপক্ষ। এসব ভবনের বাসিন্দাদের একাধিকবার নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু তাদের অনেকেই প্রশাসনের সতর্কবার্তা আমলে নিচ্ছেন না।”
তিনি বলেন, “আমরা চাইলে বল প্রয়োগ করে ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবন থেকে বাসিন্দাদের বের করে দিতে পারি, কিন্তু পৃথিবীর কোনও নগর প্রশাসন যেহেতু এমন করে না— আমরাও করব না। যারা নগর প্রশাসনের সতর্কবার্তা, অনুরোধকে পাত্তা দেন না— তাদের জন্য আজকের ঘটনা একটি বড় শিক্ষা।”
করাচির পুরোনা শহর এলাকার আবাসিক ভবনগুলো মধ্যে দূরত্ব এত কম, যে হঠাৎ দেখলে মনে হয় একটি ভবনের সঙ্গে আরেকটি লেগে আছে। লায়ারি এলাকায় যে ভবনটি ধসে পড়েছে, সেটির দু’পাশেও প্রায় লাগোয়া দু’টি আবাসিক ভবন আছে। সে দু’টি ভবন থেকে বাসিন্দাদের ইতোমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
লায়ারিতে ভবন ধসের ঘটনায় ইতোমধ্যে শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার আয়াজ সাদিক। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সিন্ধ প্রাদেশিক সরকারকে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
ভবন ধসের ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সিন্ধ প্রাদেশিক সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সাঈদ গনি। আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্র: জিও নিউজ
বিডি প্রতিদিন/একেএ