ক্রিকেট খেলার সময়ে ব্যাট হাতে তার ইনিংসের শেষটাই ছিল সবচেয়ে চমকপ্রদ। সেই কারণেই বিশেষজ্ঞরা তার নাম দিয়েছিলেন ‘ফিনিশার’।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনের ‘ফিনিশিং’টাও মহেন্দ্র সিংহ ধোনি করলেন তার নিজস্ব ভঙ্গিতেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ব্যাট-প্যাড তুলে রাখার মাহেন্দ্রক্ষণ থেকে অবসর গ্রহণের ভঙ্গি— সবটাতেই রেখে গেলেন ধোনির ট্রেডমার্ক। তার আচম্বিতে নেওয়া সিদ্ধান্তে গোটা ভারত অদ্ভূত এক ঘোরের মধ্যে। বিশ্বজয়ী অধিনায়কের অবসর গ্রহণের পাঁচ দিন পরে ধোনিকে আবেগে ভরা দু’পাতার চিঠি দিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আপ্লুত ধোনিও টুইট করে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। মোদির পাঠানো দুই পাতার সেই চিঠিও পোস্ট করেন ধোনি। দীর্ঘ চিঠির একটি অংশে প্রধানমন্ত্রী ধোনির উদ্দেশে লিখেছেন, “শুধু ক্যারিয়ারের সংখ্যাতত্ত্ব আর ম্যাচ জেতার হিসেব দিয়ে এম এস ধোনির নাম মনে রাখা হবে না। নিছক ক্রীড়াব্যক্তিত্ব হিসেবে দেখলেও আপনার প্রতি সুবিচার করা হয় না। আপনার অবদানকে এক বিশেষ ফেনোমেনন হিসেবে দেখাটাই ঠিক হবে।”
ছোট শহর থেকে ধোনির উত্থান। তার পরের ঘটনা ভারতীয় ক্রিকেটে ইতিহাস হয়ে রয়েছে। তরুণ প্রজন্মের কাছে আদর্শ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন ধোনি।
সে প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, ‘এক ছোট শহর থেকে জাতীয় স্তরে উত্থান আপনার নামের সঙ্গে সঙ্গে দেশকেও গৌরবান্বিত করেছে। তারপর থেকেই আপনার উত্থান এবং আপনার ক্রিয়াকলাপ দেশের কোটি কোটি যুবকের কাছে প্রেরণা হয়ে দাঁড়ায়। যারা আপনার মতোই কোনও অভিজাত স্কুল-কলেজে পড়েনি, পারিবারিক আভিজাত্যও নেই, কিন্তু প্রতিভা রয়েছে, যার মাধ্যমে তারা নিজেদের সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে যেতে পারে। নতুন ভারতীয় সত্তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ আপনি, যেখানে পারিবারিক পরিচিতি নয়, নিজেদের পরিচয়েই নিজেদের অভীষ্টকে গড়ে নিতে পারে তরুণ সমাজ।’
মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে ধোনি টুইট করেন, 'একজন শিল্পী, সৈনিক অথবা খেলোয়াড় এটুকু স্বীকৃতির জন্যই কাজ করেন যে, তাদের কঠোর শ্রম আর আত্মত্যাগ প্রত্যেকের নজরে আসছে এবং তার মূল্যায়ন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তার মূল্যায়ন ও শুভেচ্ছার জন্য ধন্যবাদ।'
নীরবে, নিভৃতে সরে যাওয়াও যে নাটকীয়তায় ভরপুর হতে পারে, ধোনির অবসর যেন সেটাই প্রমাণ করে দিল।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ