২৮ নভেম্বর, ২০২১ ১৫:০৩

২৮৬ রানেই শেষ পাকিস্তানের ইনিংস

অনলাইন ডেস্ক

২৮৬ রানেই শেষ পাকিস্তানের ইনিংস

সংগৃহীত ছবি

চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ইনিংসে ২৮৬ রানে অলআউট হয়ে গেছে পাকিস্তান। এর আগে, বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে করে ৩৩০ রান। যার ফলে ৪৪ রানের লিড পেয়েছে স্বাগতিকরা।

এই টেস্টের দ্বিতীয় দিনে প্রথম ইনিংসে দুই পাকিস্তানি ওপেনার আবিদ আলী-আব্দুল্লাহ শফিক ব্যাট হাতে দাপট দেখালেও তৃতীয় দিনের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি সফরকারীদের। তৃতীয় দিনে আবিদ ৯৩ রানে এবং শফিক ৫২ রানে থেকে খেলা শুরু করেন। তবে পাকিস্তানের অভিষিক্ত ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিককে দিনের শুরুতেই সাজঘরে পাঠান স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তাইজুলের স্কিড করা বল লাগে শফিকের পায়ে, জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। পাকিস্তান রিভিউ নেওয়ার চেষ্টা করেনি। শফিক আউট হন ১৬৬ বলে ৫২ রান করে। 

পরের বলেই তাইজুল ফেরান আজহার আলীকে। নতুন ব্যাটসম্যান আজহারের পায়ে লাগলেই জোরালো আবেদন করেন তাইজুলরা। কিন্তু আম্পায়ার সাড়া দেননি। বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক রিভিউ নিতে দেরি করেননি। পরে দেখা যায় আজহার ক্লিন আউট। ০ রানে ফেরেন এই ব্যাটসম্যান। উল্লাসে মেতে ওঠে বাংলাদেশ শিবির। দিনের প্রথম ওভারেই জোড়া উইকেট নিয়ে সুন্দর শুরু এনে দিয়েছেন তাইজুল।

পরপর দুই উইকেট হারানোর পর ক্রিজে এসেছিলেন সফরকারী দলের নেতা বাবর আজম। খেলছিলেন দেখেশুনে। তবে ৪৬ বলে ১০ রানের বেশি করতে পারেননি। মেহেদি মিরাজের কুইকার বুঝতে পারেননি তিনি। সরাসরি আঘাত হানে উইকেটে। মাত্র ১০ রানে আউট হয়ে ফিরেন বাবর। এরপর ক্রিজে আসেন ফাওয়াদ আলম। এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানও সুবিধা করতে পারেননি তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণির সামনে। আউটসাইড অফের বল ফাওয়াদের ব্যাট-প্যাড ছুঁয়ে যায় লিটন দাসের হাতে। প্রথমে আম্পায়ার সাড়া দেননি। রিভিউ নিয়ে নেয় বাংলাদেশ। পরিষ্কার দেখা যায় ফাওয়াদ আউট। তার ব্যাট থেকে আসে ১৫ বলে ৮ রান। আব্দুল্লাহ শফিক, আজহার আলীর পর তাইজুলের তৃতীয় শিকার ফাওয়াদ।

ফাওয়াড আলমের বিদায়ের পর ক্রিজে ক্রিজে আসেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। মধ্যাহ্ন বিরতির পর তৃতীয় ওভারেই আঘাত হানেন পেসার এবাদত হোসেন। সাজঘরে পাঠান মোহাম্মদ রিজওয়ানকে। আউটসাইড অফের ফুল বল রিজওয়ানের পায়ে লাগে, জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিতে গিয়েও আর সে পথে এগোননি রিজওয়ান। ৩৮ বলে ৫ রান করে তিনি হাঁটা ধরেন সাজঘরের পথে। বাংলাদেশের পথের কাঁটা হয়ে একাই লড়ছিলেন সেঞ্চুরিয়ান আবিদ আলী। অবশেষে সেই কাঁটা ভাঙে তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে। তাইজুলের ফুলিশ বল ব্যাট মিস করে লাগে আবিদের পায়ে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউ নেন আবিদ। পরে দেখা যায় বল লেগ স্ট্যাম্প স্পর্শ করে বেরিয়ে যাচ্ছে। আম্পায়ার্স কল হওয়াতে শেষ পর্যন্ত সাজঘরে যেতে বাধ্য হন আবিদ। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৩৩ রান। ২৮২ বলে ১২টি চার ও ২টি ছয়ে এই রান করেন আবিদ।

আবিদ আলীর বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন হাসান আলী। তিনি আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন। তাইজুলকে প্রথম বলে মিড অন দিয়ে চার, দ্বিতীয় বলে এগিয়ে এসে কাউ কর্নারে ৬, তৃতীয় বলেও মারতে যায়ে ব্যাট মিস করে চলে যায় উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে। স্ট্যাম্পিং করতে দেরি করেননি লিটন। ৮ বলে ১২ রান করে সাজঘরে ফেরেন হাসান। এই ইনিংসে এটি তাইজুলের পঞ্চম উইকেট। টেস্ট ক্যারিয়ারে নবমবারের মতো ৫ উইকেটের দেখা পেয়েছেন এই স্পিনার।

হাসান আলীর বিদায়ের পর সাজিদ খানকে বোল্ড করে সাজঘরে পাঠালেন এবাদত হোসেন। আউটসাইড অফের লেন্থ বল ভেঙে দেয় সাজিদের উইকেট। ১২ বলে ৫ রান করেন সাজিদ। সাজিদ এবাদতের দ্বিতীয় শিকার। এবার সাজঘরে ফেরেন নোমান আলী। ১৪ বলে ৮ রান করে ফেরেন এলবিডব্লিউ হয়ে। রিভউ নিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এটি তাইজুলের ষষ্ঠ শিকার।  তবে শেষ উইকেটে ফাহিম আশরাফ-শাহীন আফ্রিদি ভুগিয়েছেন বাংলাদেশকে। শেষ উইকেটের জুটিতে ইতিমধ্যে ৬৯ বলে ২৯ রান যোগ করে পাকিস্তান। তবে শেষ পর্যন্ত ফাহিম আশরাফ পরাস্ত হন তাইজুলের কাছে। আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ৮০ বলে ৩৮ রান।

এছাড়া তৃতীয় দিনের দুই সেশনেই রাজত্ব করেছে বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণির কাছে যেন অসহায় ছিল সফরকারীরা। একাই নিয়েছেন ৭ উইকেট। ২৮৬ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। ৪৪ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নামবে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ১২৭ রান করেন আবিদ আলী। এ ছাড়া ৫২ রান করেন আব্দুল্লাহ শফিক। এই দুই ওপেনার ছাড়া পাকিস্তানের কোনো ব্যাটসম্যানের ব্যাট হাসেনি। তাইজুল একাই নেন ৭ উইকেট। এবাদত ২ ও মিরাজ নেন ১টি উইকেট।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর