বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় দক্ষিণ এশিয়া স্যাম্বো চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৩-এ বাংলাদেশ বাজিমাত করল। ১৪ টি স্বর্ণ, ১৬ টি রৌপ্য ও ১৮টি ব্রোঞ্জ মোট ৪৮ টি পদক নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করল বাংলাদেশ।
অপরদিকে ভারত ১৪ স্বর্ণ, ১৩টি রৌপ্য ও ১৬টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৪৩ টি পদক নিয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। অংশগ্রহণকারী শ্রীলঙ্কা ৪টি স্বর্ণ, ৩টি রৌপ্য ও ২টি ব্রোঞ্জ, নেপাল ২টি স্বর্ণ, ও ২টি ব্রোঞ্জ এবং মালদ্বীপ ১টি রৌপ্য অর্জন করেছে।
এ চ্যাম্পিয়নশিপে মোট ৫৬টি ওজন ক্যাটাগরিতে ছয়টি দেশের মোট ১৭২ জন অ্যাথলেট অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ স্যাম্বো ও কুরাশ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আর এম ফয়জুর রহমান বলেন, পারস্পারিক সৌহার্দ্য ও খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব নিয়ে প্রত্যেক অ্যাথলেট প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশে সকল ইভেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
তিনি আরো বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে খেলা পরিচালনা, রেফারিং, স্কোরিং-এ ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা ও পুরস্কার বিতরণীতে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে সকল আয়োজন করা হয়। চ্যাম্পিয়নশিপে যে সকল আন্তর্জাতিক টেকনিক্যাল অফিসার ও ফেডারেশনের কর্মকর্তারা যোগদান করেন তারা সকলেই বাংলাদেশ স্যাম্বো অ্যান্ড কুরাশ অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তারা ২০২৫ সালে বাংলাদেশে এশিয়ান স্যাম্বো চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
এশিয়া অ্যান্ড ওশেনিয়া স্যাম্বো ফেডারেশনের সভাপতি অ্যালামজন মুলায়েভ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়নশিপের সকল আয়োজন প্রত্যক্ষ করেন এবং অনুষ্ঠিত সেমিনারে যোগ দেন। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে সকল ইভেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন করায় আয়োজকদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
ডিরেক্টর জেনারেল অব স্যাম্বো ইউনিয়ন অব এশিয়া অ্যান্ড ওশেনিয়া ও হেড অব লিগ্যাল, ইন্টারন্যাশনাল স্যাম্বো ফেডারেশন সুরেশ গোপী বলেন, বাংলাদেশি অনেক সম্ভাবনাময় অ্যাথলেট রয়েছে। যাদের সঠিকভাবে নার্সিং করলে এবং অনুশীলন করালে অলিম্পিকের মতো বড় আসরেও পদক জয় করা সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি। একটি নতুন অ্যাসোসিয়েশন হিসেবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মানের যে আয়োজনটি করেছে তা অনুসরণীয়। তিনি বাংলাদেশ স্যাম্বো অ্যান্ড কুরাশ অ্যাসোসিয়েশনের সফলতা কামনা করেন।
বাংলাদেশ স্যাম্বো অ্যান্ড কু্রাশ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, প্রতিযোগিতাটি স্পোর্টস স্যাম্বো, কম্ব্যাট স্যাম্বো, জুনিয়র ও সিনিয়র, নারী ও পুরুষ মিলে মোট ৫৬ টি ওজন শ্রেণিতে অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে সিনিয়র খেলোয়াড়দের জন্য ৭টি ওজন ক্যাটাগরি স্পোর্টস স্যাম্বো (অ্যাডাল্ট-পুরুষ), ৭ টি ওজন ক্যাটাগরি স্পোর্টস স্যাম্বো (অ্যাডাল্ট-নারী), ৭টি ওজন ক্যাটাগরি কমব্যাট স্যাম্বো (অ্যাডাল্ট-পুরুষ), ৭ টি ওজন ক্যাটাগরি কমব্যাট স্যাম্বো (অ্যাডাল্ট-নারী) এবং জুনিয়র খেলোয়াড়দের জন্য ৭টি ওজন ক্যাটাগরি স্পোর্টস স্যাম্বো (জুনিয়র-পুরুষ), ৭টি ওজন ক্যাটাগরি স্পোর্টস স্যাম্বো (জুনিয়র-নারী), ৭টি ওজন ক্যাটাগরি কমব্যাট স্যাম্বো (জুনিয়র-পুরুষ), ৭টি ওজন ক্যাটাগরি কমব্যাট স্যাম্বো (জুনিয়র-নারী) ছিল। সর্বোচ্চ স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত দেশ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বিবেচিত হয়।
প্রতিটি ইভেন্ট শেষে বিজয়ীদের পদক, সার্টিফিকেট প্রদান ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। দক্ষিণ এশিয়া স্যাম্বো ফেডারেশনের কর্মকর্তা, আগত দেশসমূহের ফেডারেশনের কর্মকর্তা এবং স্বাগতিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ স্যাম্বো অ্যান্ড কুরাশ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা বিজয়ীদের পদক পরিয়ে দেন।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকা, বাংলাদেশের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ ইনডোর স্টেডিয়ামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় দক্ষিণ এশিয়া স্যাম্বো চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৩-এর শুভ উদ্বোধন করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্যাম্বো অ্যান্ড কোরাশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইন্টারন্যাশনাল টেকনিক্যাল অফিসার কিরগিজ রিপাবলিক থেকে আলেকজান্ডার ল্যারিওনভ ও আর্সেন কামচিবেকভ; ইন্দোনেশিয়া রিপাবলিক থেকে আর্নল্ড সিলালাহি ও জয়নাল আরিফিন; ডিরেক্টর জেনারেল অব স্যাম্বো ইউনিয়ন অব এশিয়া অ্যান্ড ওশেনিয়া ও হেড অব লিগ্যাল, ইন্টারন্যাশনাল স্যাম্বো ফেডারেশন সুরেশ গোপী; রিজিওনাল ভাইস প্রেসিডেন্ট স্যাম্বো ইউনিয়ন অব এশিয়া অ্যান্ড ওশশেনিয়া ও প্রেসিডেন্ট সাউথ এশিয়া এবং নেপাল স্যাম্বো ফেডারেশন ধনঞ্জয় শ্রেষ্ঠা, বাংলাদেশ স্যাম্বো অ্যান্ড কু্রাশ অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ও ডিএমপির এডিসি (ফোর্স) মো. শরিফুল আলম এবং ডিএমপির এডিসি (কোয়াটার মাস্টার) ওবায়দুর রহমানসহ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের কর্মকর্তা, খেলোয়াড়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ