কাঁধের পুরোনো চোটের সঙ্গে লড়াইয়ে জিতে টেস্ট দলে ফিরেছেন তাসকিন আহমেদ। তবে সাদা পোশাকে নামার জন্য অপেক্ষা করতে হবে তাকে। পাকিস্তানে প্রথম টেস্ট খেলতে পারবেন না তিনি। ওই সময় তাসকিনকে পাঠানো হবে ‘এ’ দলের চার দিনের ম্যাচে।
পাকিস্তান সফরের দল ঘোষণার বিবৃতিতে এই খবর জানিয়েছেন গাজী আশরাফ হোসেন। তাসকিন দীর্ঘ দিন লাল বলের ক্রিকেট না খেলায় ছন্দ পাওয়ার জন্য এই সিদ্ধান্তের কথা বলেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক।
গত বছরের জুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সবশেষ লাল বলের ক্রিকেট খেলেন তাসকিন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সেটিই তার সবশেষ ম্যাচ। চলতি বছর বিপিএল চলাকালে কাঁধের পুরোনো চোটের কারণে টেস্ট থেকে সাময়িক বিরতিও নেন ২৯ বছর বয়সী পেসার। যে কারণে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে খেলা হয়নি তার। তবে সেই বিরতি আর দীর্ঘায়িত হলো না।
পাকিস্তান সফরে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সিরিজে তাসকিনকে দলে রেখেছেন নির্বাচকরা। তবে বিসিবির বিবৃতিতে গাজী আশরাফ জানিয়েছেন, শুধু দ্বিতীয় টেস্ট খেলবেন গতিময় পেসার। তিনি জানান, “আমরা এটি মাথায় রেখে দলে পাঁচ পেসার নিয়েছি যে, তাসকিন আহমেদ শুধু দ্বিতীয় টেস্ট খেলবে। গত বছরের জুনের পর সে টেস্টে আর বোলিং করেনি। আমরা তাকে পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় চার দিনের ম্যাচের দলে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাতে করে সে দীর্ঘ সংস্করণের ম্যাচ খেলার ছন্দ পেতে পারে।”
গাজী আশরাফ আরও বলেন, “এছাড়া পেসারদের কয়েকজন হয়তো (পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে) ওয়ানডে সিরিজের জন্য ‘এ’ দলে যোগ দেবে। তাই আমাদের ব্যাকআপ প্রয়োজন। আমাদের আক্রমণে বৈচিত্র আছে, যারা জোরে বল করতে পারে এবং সুইংও করাতে পারে। বিশ্বমানের ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে তাদের পারফর্ম করতে দেখার অপেক্ষায় আছি।”
টেস্ট সিরিজের দুই ম্যাচ খেলতে সোমবার পাকিস্তানের উদ্দেশে দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ। দুটি চার দিনের ও তিনটি এক দিনের ম্যাচ খেলতে জাতীয় দলের আগেই পাকিস্তানে চলে গেছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। ইসলামাবাদে আগামী ১৩ অগাস্ট শুরু হবে প্রথম চার দিনের ম্যাচ। পরের ম্যাচ ২০ অগাস্ট শুরু। ওই ম্যাচেই দেখা যেতে পারে তাসকিনকে। আর রাওয়ালপিন্ডিতে ২১ অগাস্ট শুরু হবে জাতীয় দলের প্রথম টেস্ট। পরে করাচিতে ৩০ অগাস্ট থেকে দ্বিতীয় ম্যাচ।
তাসকিনের পাশাপাশি টেস্ট দলে ফিরেছেন আঙুলের চোটে সবশেষ সিরিজ থেকে বাদ পড়া মুশফিকুর রহিম। এছাড়া স্কোয়াডে পরিবর্তন নেই তেমন। শ্রীলঙ্কা সিরিজে থাকা শাহাদাত হোসেন ছাড়া বাকি সবাই জায়গা ধরে রেখেছেন। সব মিলিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল নিয়ে ভালো করতে আশাবাদী প্রধান নির্বাচক।
তিনি জানান, “(দল সাজানোর ক্ষেত্রে) এই সংস্করণে আমাদের সেরা ক্রিকেটারদের দিকেই জোর ছিল। এটি ভারসাম্যপূর্ণ স্কোয়াড। মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক ও সাকিব আল হাসান মিলে ২১৬ টেস্ট খেলেছেন। এমন অভিজ্ঞতার কোনো বিকল্প হয় না।”
প্রধান নির্বাচক আরও বলেন, “তাইজুল (ইসলাম) ও (মেহেদী হাসান) মিরাজ দীর্ঘ দিন ধরে আমাদের স্পিন বিভাগ এগিয়ে নিচ্ছে এবং দুজন মিলে ৩৫০ এর বেশি উইকেট নিয়েছে। এছাড়া আমরা আশা করি (নাজমুল হোসেন) শান্ত, লিটন (কুমার দাস) এবং অন্য ব্যাটসম্যানরাও এগিয়ে আসবে। কারণ, পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দলীয় প্রচেষ্টা লাগবে।”
কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে মুশফিক ছাড়াও টেস্ট স্কোয়াডে থাকা মুমিনুল, মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান, নাঈম হাসান ও হাসান মাহমুদ ‘এ’ দলের সঙ্গে আগেভাগেই চলে গেছেন পাকিস্তানে। তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান গাজী আশরাফ।
তিনি জানান, “পাকিস্তান খুব কঠিন প্রতিপক্ষ। বিশেষ করে তাদের ঘরের মাঠে এটি আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং সফর হবে। লাহোরে আমরা বাড়তি কিছু দিন পাব প্রস্তুতির জন্য। এটি আমাদের জন্য ভালো। এছাড়া ‘এ’ দলের সঙ্গে পাকিস্তানে থাকা কয়েকজন জাতীয় দলে যোগ দেবে। কন্ডিশনের ব্যাপারে তাদের অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে দেবে।”
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ