লিভারপুলের জন্য ম্যাচটি ছিল ভীষণ আবেগঘন। দেড় মাস আগে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ক্লাবটির পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড দিয়োগো জোটা ও তার ভাই আন্দ্রে সিলভা। মাত্র ২৮ বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়ে যাওয়া জোটা দুর্ঘটনার মাত্র ১১ দিন আগে বিয়ে করেছিলেন রুতে কার্দোসোকে, যিনি এখন তাদের তিন সন্তানের একমাত্র ভরসা।
অ্যানফিল্ডে বোর্নমাউথের বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর আগে পুরো স্টেডিয়াম ভেসে যায় জোটার স্মৃতিতে। বিশাল ব্যানারে লেখা ছিল, “রুতে, দিনিস, দুয়ার্তে, মাফালদা – অ্যানফিল্ড সবসময় তোমাদের ঘর থাকবে। ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন।” দর্শকেরা এক মিনিট নীরবতা পালন করেন, পাশাপাশি গ্যালারিতে গড়ে ওঠে বিশাল মোজাইক—যেখানে ফুটে ওঠে জোটা ও সিলভার নামের প্রথম অক্ষর, তাদের জার্সি নম্বর এবং পর্তুগালের পতাকা।
ম্যাচে নামার পরও জোটার ছায়া ঘুরে বেড়িয়েছে লিভারপুলের খেলায়। ৪-২ গোলের জয় নিশ্চিত করা সেই ম্যাচে রোমাঞ্চের পাশাপাশি ছিল শোক আর স্মৃতির আবেশ।
হুগো একিতিকে ও কোডি গাকপোর গোলে প্রথমে এগিয়ে যায় লিভারপুল। তবে দারুণ লড়াই করে ফিরে আসে বোর্নমাউথ। আন্তোয়ান সেমেনিও একাই দুই গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান। এর মাঝেই এক বিতর্কিত ঘটনা ঘটে—সেমেনিও রেফারিকে জানান, গ্যালারি থেকে তাকে বর্ণবাদী গালি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তৎক্ষণাৎ ওই দর্শককে মাঠ থেকে বের করে দেয়।
শেষ দিকে নাটক জমে ওঠে। ৮৯ মিনিটে গোল করে লিভারপুলকে আবার এগিয়ে দেন ফেদেরিকো কিয়েসা। যোগ করা সময়ে গোল করেন মোহামেদ সালাহ। তবে সেই গোলের পর সালাহ আর সাধারণ উদযাপন করেননি—জোটার স্মরণে তার বিখ্যাত সেলিব্রেশন ভঙ্গি নকল করেন। ম্যাচ শেষে যখন দর্শকেরা জোটার নাম ধরে স্লোগান দেন, আবেগে ভেসে গিয়ে কেঁদে ফেলেন মিশরীয় তারকা।
অবশেষে জয়, শোক আর আবেগের মিশেলে লিভারপুল তিন পয়েন্ট তুলে নেয় অ্যানফিল্ড থেকে। তবে এই রাতটা জয় নয়, চিরদিন মনে থাকবে প্রয়াত সতীর্থ দিয়োগো জোটাকে ঘিরে আবেগের জন্য।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম