যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের নির্দেশনা না মানায় প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপলকে ফেডারেল অপরাধ তদন্তের মুখে পড়তে হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার এক বিচারক অ্যাপল এবং এর এক শীর্ষ কর্মকর্তাকে বিচারবিভাগীয় অবমাননার অভিযোগে ফেডারেল প্রসিকিউটরের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
গত বুধবার, যুক্তরাষ্ট্রের ওকল্যান্ডের জেলা বিচারক ইভোন গনজালেজ রজার্স রায় দেন, অ্যাপল তার অ্যাপ স্টোরে প্রতিযোগিতা উন্মুক্ত করার আদেশ মানেনি এবং ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে।
এই মামলাটি ছিল জনপ্রিয় গেম নির্মাতা কোম্পানি এপিক গেমসের করা এক অ্যান্টিট্রাস্ট মামলার অংশ, যেখানে অভিযোগ ছিল অ্যাপল অ্যাপ ডাউনলোড এবং ইন-অ্যাপ পেমেন্টে একচেটিয়া প্রভাব বিস্তার করছে এবং অতিরিক্ত কমিশন নিচ্ছে।
রায়ে বিচারক বলেন, 'অ্যাপলের প্রতিযোগিতা বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না। এটি একটি আদেশ, কোনো দর কষাকষি নয়।' তিনি আরও বলেন, অ্যাপল ইচ্ছাকৃতভাবে আদেশ মানেনি, তাই কোনো দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
বিচারক আরও উল্লেখ করেন, অ্যাপলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অফ ফিন্যান্স, অ্যালেক্স রোমান আদালতে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন তা ভ্রান্ত তথ্য এবং মিথ্যায় ভরপুর ছিল।
অ্যাপল অবশ্য এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা রায়ের সঙ্গে একমত নয় এবং রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে। তবে আদালতের আদেশ মানতে তারা প্রস্তুত।
অন্যদিকে এপিক গেমসের সিইও টিম সুইনি এই রায়কে ডেভেলপার ও গ্রাহকদের জন্য একটি বড় জয় হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি জানান, এই রায়ের ফলে অ্যাপলকে বিকল্প পেমেন্ট সার্ভিসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে, যা তারাই চেয়েছিলেন শুরু থেকেই।
২০২০ সালে অ্যাপল, এপিক গেমসের অ্যাকাউন্ট বাতিল করে দেয়, যখন তারা আইফোন ব্যবহারকারীদের অ্যাপলের বাইরে অন্য পেমেন্ট অপশন ব্যবহারের সুযোগ দেয়। এরপর থেকেই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আইনি লড়াই শুরু হয়।
২০২১ সালে আদালত অ্যাপলের বিরুদ্ধে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রতিযোগিতা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে রায় দেয় এবং নির্দেশ দেয়, অ্যাপ ডেভেলপারদের তাদের পেমেন্ট অপশন সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের জানাতে দিতে হবে। কিন্তু অ্যাপল পরে এক নতুন কমিশন ব্যবস্থা চালু করে যেখানে তারা অ্যাপ স্টোরের বাইরে পেমেন্ট হলেও ২৭% ফি ধার্য করে।
বিচারক গনজালেজ রজার্স বুধবারের রায়ে বলেন, অ্যাপল এখন থেকে ডেভেলপারদের সঙ্গে ব্যবহারকারীদের যোগাযোগে বাধা দিতে পারবে না এবং তারা কোনো অতিরিক্ত কমিশন আরোপ করতে পারবে না।
তিনি বলেন, আদালতের এই আদেশ আর বিলম্বিত করা যাবে না, এবং এ বিষয়ে কি কোনো ফৌজদারি মামলা হবে, তা সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাহী শাখা।
বিডি প্রতিদিন/মুসা