প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনার ক্ষত এখনো শুকায়নি সিলেটে। ২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত করোনা সিলেটে একের পর এক কেড়েছে প্রাণ। এই এক বছরে হাজারের অধিক মানুষ মারা গেছেন করোনায়। এবার সিলেটে ভয় তৈরি করেছে আরেক প্রাণঘাতী ভাইরাস ‘মাঙ্কিপক্স’।
তবে এখনো এ অঞ্চলে সংক্রমণ হয়নি ভাইরাসটির। তা না হলেও এখন থেকেই সতর্ক হচ্ছে সিলেট। প্রাণঘাতী ভাইরাস ‘মাঙ্কিপক্সের’ সংক্রমণ ঠেকাতে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। একই নির্দেশ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রতি।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মাঙ্কিপক্স নিয়ে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সতর্কতার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক), বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, এয়ারলাইন্স, রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (সিবিসি) এবং বিমানবন্দর স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
অপারেশনস মেম্বার এয়ার কমোডর এ এফ এম আতীকুজ্জামান বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের জন্য সতর্কতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, মাঙ্কিপক্স বিষয়ে এয়ারলাইনসগুলোকে সতর্ক থাকতে। মাঙ্কিপক্স লক্ষণযুক্ত কোনো যাত্রী থাকলে দ্রুত তা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানাতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশে আসার ২১ দিনের মধ্যে যাত্রীদের মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলো দেখা দিলে ১০৬৫৫ নম্বরে কল করতেও অনুরোধ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য বিভাগ ইতোমধ্যে লক্ষণযুক্ত যাত্রীদের মোকাবিলার জন্য ব্যবস্থা স্থাপন করেছে। লিফলেট দিচ্ছে এবং আগমন স্বাস্থ্য ডেস্কগুলো ২৪/৭ ডাক্তারের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে আগত যাত্রীদের তাপমাত্রা থার্মাল স্ক্যানার আর্চওয়ে দ্বারা স্ক্রিন করছে। প্রয়োজন হলে লক্ষণযুক্ত যাত্রীদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, সংক্রামক রোগ হাসপাতাল এবং কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে পাঠানো হবে।
এদিকে শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত দেশ বা ব্যক্তির সংস্পর্শের কারণে বাংলাদেশে আসা দেশি না বিদেশি ব্যক্তির মাধ্যমে রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
প্রসঙ্গত, আফ্রিকার দেশগুলোতে নতুন করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী ভাইরাস মাঙ্কিপক্স (এমপক্স)। চলতি বছর শুধু আফ্রিকাতেই এপর্যন্ত পাঁচশ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং অন্য মহাদেশেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতে বুধবার জনস্বাস্থ্যে বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
সাধারণত, কারো মাঙ্কিপক্স হলে তার সংস্পর্শে আসা মানুষদের তা হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। তাতে শরীরে জ্বরের উপসর্গ থাকে। তবে জ্বর খুব বেশি হয় না। বরং শরীরে পুঁজ-ভর্তি ক্ষত দেখা দেয়। এই রোগ প্রাণঘাতী।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত