শুক্রবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

আর পিছিয়ে থাকবে না নারীরা

নারী সৈনিকদের শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

আর পিছিয়ে থাকবে না নারীরা

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে সেনাবাহিনীর প্রথম মহিলা রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্যারেড পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্রথম মহিলা সৈনিক ব্যাচ হিসেবে ৮৭৯ জন নবীন নারী সৈনিকের শপথ গ্রহণ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ফোর্সেস গোল ২০৩০ বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় সেনাবাহিনীতে মহিলা সৈনিক নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেনাবাহিনীর মতো একটি চ্যালেঞ্জিং পেশায় নারীদের এই অংশগ্রহণ নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গতকাল সকালে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে শহীদ সালাউদ্দিন সেনানিবাসের শহীদ বীরউত্তম প্যারেড গ্রাউন্ডে নবীন এই নারী সৈনিকরা কুচকাওয়াজে অংশ নেন এবং সৈনিক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। পরে নবীন সৈনিকদের উদ্দেশে তিনি ভাষণ দেন।
এর আগে সকাল সোয়া ১০টায় প্যারেড সিনিয়র রিক্রুট শারমিন আক্তারের সঙ্গে মাঠে প্রবেশ করে মার্কার ও পাইলট দল। এরপরই দলে দলে নবীন সৈনিকরা সারিবদ্ধভাবে প্রবেশ করেন। বিউগল বাজিয়ে প্রবেশ করে ১০৩ জনের বাদক দল। মাঠে আসে মহিলা প্রশিক্ষণার্থীদের কনটিনজেন্ট। প্যারেড অ্যাডজুট্যান্ট শামীমা নাসরিনের কাছে প্যারেড হস্তান্তর করেন প্যারেড ট্রেনি সিনিয়র। প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রবেশ করেন প্যারেড কমান্ডার সেতারা সুলতানা। কমান্ডারের নির্দেশে প্রবেশ করে জাতীয় পতাকাবাহী দল। কুচকাওয়াজের প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ব্রিগেডিয়ার কাজী মো. আবুল কালাম আজাদ। পরে একে একে সামারিক বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তারা প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রবেশ করেন। সকাল সাড়ে ১০টায় মোটর শোভাযাত্রাসহ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শেখ হাসিনা আগমন করেন। তাকে সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়াসহ অন্যরা অভ্যর্থনা জানান। প্রধানমন্ত্রী প্যারেড পরিদর্শন করেন। পরে মাঠে অবস্থানরত সৈনিকরা মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিজ নিজ পবিত্র ধর্মগ্রন্থ স্পর্শ করে শপথ নেন। শপথ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন লে. কর্নেল মো. মহসিন। পুরাতন প্রহরীরা এ সময় নতুনদের জাতীয় পতাকা অর্পণ করে প্যারেড গ্রাউন্ড ত্যাগ করেন। শুরু হয় মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রদর্শন। ধীর পদক্ষেপে, বাদ্যের তালে তালে সুশৃঙ্খলভাবে এগিয়ে চলে পুরো প্যারেড দল। সৈনিকদের আটটি কনটিনজেন্ট ও জাতীয় পতাকাবাহী দল একে একে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানায়। কুচকাওয়াজ শেষে শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষণার্থী মহিলা সৈনিকদের (মেমোরি হাসান ও শান্তনা রানী মণ্ডল) পুরস্কৃত করা হয়। সেনাবাহিনীতে প্রথমবারের মতো নারী সৈনিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত সৈনিকদের নিয়ে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান উপভোগ করেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা। এ ছাড়া কুচকাওয়াজ শেষে অন্য এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেনানিবাসে নবনির্মিত সদর দফতর, ৯৮ সংমিশ্রিত ব্রিগেড অফিস ভবন, ১২ তলা বিশিষ্ট অফিসার্স মেস কমপ্লেক্সসহ পারিবারিক বাসস্থানের ফলক উন্মোচন করেন। এই প্রথম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে কোনো সেনানিবাসের নামকরণ করা হলো।

সর্বশেষ খবর