মালয়েশিয়ায় অবস্থান করে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে বিমানবন্দর থানায় করা মামলায় প্রবাসী সজীব মিয়া আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমানের আদালত তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। একই সঙ্গে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব রহমানের আদালত অন্য আসামি ওয়াসিম আকরামের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিন তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়। ওই সময় আসামি সজীব স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অ্যান্টি-টেররিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক কে এম তারিকুল ইসলাম তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। এ ছাড়া অন্য আসামি আকরামের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তিন দিন রিমান্ডের আদেশ দেন। এর আগে ১ আগস্ট সজীবকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন আদালত। ৫ জুলাই অ্যান্টি-টেররিজম ইউনিটের ইনটেলিজেনস শাখার পুলিশ পরিদর্শক আবদুল বাতেন রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন।
অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। তাঁরা মালয়েশিয়ায় অবস্থান করে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। মালয়েশিয়ার আইপি ঠিকানা ব্যবহার করে কিছু বাংলাদেশি নাগরিকের পরিচালিত সমাজমাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ এবং প্রচার-প্ররোচনা চালিয়ে আসছিলেন। আসামিরা মালয়েশিয়ায় অবস্থান করে সে দেশের জননিরাপত্তা, জনসাধারণের আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। পরে ২৮ এপ্রিল থেকে ২১ জুন পর্যন্ত মালয়েশিয়ান পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। আসামিরা সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হয়ে আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী স্বেচ্ছায় দেওয়া অনুদানের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করেন। পরে সংগৃহীত অর্থ ই-ওয়ালেট এবং আন্তর্জাতিক অর্থ স্থানান্তর পরিষেবার মাধ্যমে অন্যান্য দেশে প্রেরণ করেন। সংগঠনটির সদস্য হিসেবে বছরে ৫০০ রিঙ্গিত চাঁদা প্রদান করতেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ও পলাতক আসামিদের মালয়েশিয়ান পুলিশ পর্যায়ক্রমে নিজ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। গোয়েন্দা তথ্য ও অন্যান্য তথ্যের আলোকে জানা গেছে, আসামিরা পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশে এসে সন্ত্রাসবাদে জড়িত হয়ে উগ্রবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করে দেশের অখ তা, সংহতি, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, জননিরাপত্তা, জনসাধারণের কোনো অংশে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করে যে কোনো সময় বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলার শঙ্কা রয়েছে।