আপনি কি জানেন, বিশ্বের শ খানেক মূল্যবান ব্র্যান্ডের মূল্য কত? উত্তর : ৫ ট্রিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি ব্র্যান্ডের বাজার মূল্য একত্রে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার কিংবা তারও বেশি। মূলত শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ারের মূল্য এসব স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে সবার আগে জানতে হবে ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’র গুরুত্ব। একটু সহজ করে বললে, আবুল মিয়ার কফির দাম ৫০ টাকা। সেই একই কফি স্টারবাকসে গেলে হবে ৬০০ টাকা। ব্র্যান্ডের এমনই ভ্যালু।
প্রতি বছরের মতো এ বছরও সেরা ১০০ গ্লোবাল ব্র্যান্ডের তালিকা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান ‘ব্র্যান্ড ফিন্যান্স’। ২০২৪ সালের সেই তালিকায় সবার ওপর রয়েছে আমেরিকার বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি ‘অ্যাপল করপোরেশন’। তাদের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ ৫১৬.৬ বিলিয়ন ডলার। প্রায় এক যুগ ধরে অ্যাপল বিশ্বের সেরা ১০০ গ্লোবাল ব্র্যান্ডের তালিকায় শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। এদিকে গতবারের মতো দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান ধরে রেখেছে যথাক্রমে মাইক্রোসফট করপোরেশন এবং গুগল এলএলসি। এ বছর ই-কমার্স ও স্ট্রিমিং জায়ান্ট অ্যামাজন চতুর্থ স্থান পেয়েছে। আর তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সুপার ব্র্যান্ড স্যামসাং গ্রুপ।
বিশ্বের সেরা ব্র্যান্ড নির্বাচিত হয়েছে আমেরিকার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাপল করপোরেশন’। বরাবরের মতো আমেরিকার এই প্রযুক্তি-পণ্য প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের সেরা ব্র্যান্ডের খেতাব ধরে রেখেছে, যা ‘ব্র্যান্ড ফিন্যান্স’-এর রেকর্ড করা সবচেয়ে মূল্যবান ব্র্যান্ড। অ্যাপলের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ ৫১৬.৬ বিলিয়ন ডলার। সামগ্রিকভাবে প্রথম স্থানে থাকা- অ্যাপলের ব্র্যান্ডের মূল্য গত বছরের তুলনায় ২১৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি বেড়েছে। যদিও আইফোনের বিক্রি কম হয়েছে। তবে অ্যাপল করপোরেশন তাদের অ্যাপল টিভির দিকে বেশি নজর দিয়েছে। ‘ব্র্যান্ড ফিন্যান্স’-এর একটি জরিপে ৫০ শতাংশের বেশি লোক বলেছে যে, তাদের পণ্যগুলো ব্যয়বহুল। সেরা ব্র্যান্ড নির্বাচনকারী প্রতিষ্ঠান ‘ব্র্যান্ড ফিন্যান্স গ্লোবাল ১০০’-এর প্রকাশিত এক তালিকায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
তালিকায় থাকা শীর্ষ ১০ সেরা ব্র্যান্ডের অন্যগুলো হলো- মাইক্রোসফট, গুগল, অ্যামাজন, স্যামসাং গ্রুপ, ওয়ালমার্ট, টিকটক, ফেসবুক, ডয়চে টেলিকম এবং আইসিবিসি। ‘ব্র্যান্ড ফিন্যান্স গ্লোবাল ১০০’ তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশ্বের সেরা ব্র্যান্ডের প্রথম চারটি প্রতিষ্ঠান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। সেরা ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেম আমেরিকার মাইক্রোসফটের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ ৩৪০.৪ বিলিয়ন ডলার। সমগ্র বিশ্বের মানুষের ব্যবহৃত মার্কিন সার্চ-ইঞ্জিন গুগল এলএলসির ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ ৩৩৩.৪ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি কোম্পানি ওয়ালমার্টের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ ৩০৮.৯ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহৎ মাল্টিন্যাশনাল কংগ্লোমারেট কোম্পানি স্যামসাংয়ের (স্যামসাং গ্রুপ) ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ ৯৯.৪ বিলিয়ন ডলার। তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে আমেরিকার আরেক পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি এবং দেশটির সর্ববৃহৎ খুচরা বিক্রেতা ওয়ালমার্ট। তাদের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ ৯৬.৮ বিলিয়ন ডলার। তালিকায় চীনের দুটি সর্বোচ্চ মূল্যবান কোম্পানি রয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া টিকটক হলো তার সবচেয়ে মূল্যবান ব্র্যান্ড। এককথায়, চমক দেখিয়েছে চীনের জনপ্রিয় ভিডিও স্ট্রিমিং টিকটক। তালিকায় এর অবস্থান সপ্তম, যার ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ ৮৪.২ বিলিয়ন ডলার। আর অষ্টম স্থানে রয়েছে আমেরিকার আরেক টেক কোম্পানি ফেসবুক। যার ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ ৭৫.৭ বিলিয়ন ডলার। তালিকায় শীর্ষ দশের মধ্যে নবম স্থানে রয়েছে জার্মানির বৃহৎ টেলি কমিউনিকেশন ব্র্যান্ড ডয়চে টেলিকম। তাদের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ ৭৩.৩ বিলিয়ন ডলার। ৫০টিরও বেশি দেশে ২৪৫ মিলিয়ন মোবাইল গ্রাহককে পরিষেবা দেওয়া টেলিকম কোম্পানি জার্মানির ডয়চে টেলিকম ইউরোপে সবচেয়ে মূল্যবান ব্র্যান্ড। এরা বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে মূল্যবান টেলিকম ব্র্যান্ড হিসেবে Verizon-কেও ছাড়িয়ে গেছে। তালিকায় শীর্ষ দশে স্থান পেয়েছে চীনের জনপ্রিয় ব্যাংক ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়না (আইসিবিসি)। তাদের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ ৭১.৮ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে টেসলার ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ ৫৮.৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে গেছে, ফলস্বরূপ- শীর্ষ ১০ থেকে বাদ পড়েছে। এদিকে নতুন এবং সাশ্রয়ী মূল্যের বৈদ্যুতিক যান (EV) নির্মাতাদের গাড়ির বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে BYD। চীনের বাজারে জোরালো চাহিদার কারণে BYD ২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিক্রীত বৈদ্যুতিক যান (EV) কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। আসলে দেশে বিক্রি হওয়া নতুন গাড়ির এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি ছিল বৈদ্যুতিক যান (EV)। অন্যদিকে দ্রুত বর্ধনশীল ব্র্যান্ডের তালিকায় রয়েছে আমেরিকার প্রযুক্তি কোম্পানি এনভিডিয়া। এনভিডিয়ার ব্র্যান্ড ভ্যালু বেড়েছে। কারণ বিনিয়োগকারীরা AI শেয়ারে ভিড় করেছে এবং তাদের মেমরি চিপগুলোর চাহিদার অনেক ত্বরান্বিত হয়েছে। কোম্পানিটি ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের মার্কেট ক্লাবে যোগদান করেছে। এটি ট্রিলিয়ন ডলারের ঘরে স্থান পাওয়া পঞ্চম কোম্পানি। শুধু তাই নয়, এর মূল্য নেটফ্লিক্স, টেসলা এবং ওয়ালমার্টের থেকেও বেশি। দ্রুত বর্ধনশীল ব্র্যান্ডের তালিকায় আরও রয়েছে চীনের ব্যাটারি উৎপাদন প্রতিষ্ঠান সিএটিএল (CATL), আমেরিকার হোম হেল্থ কেয়ার সার্ভিস কোম্পানি এবং দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুন্দাই গ্রুপ। এদিকে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে ভারতের সবচেয়ে মূল্যবান ব্র্যান্ড হলো- টাটা গ্রুপ।
২০২৪ সালে বিশ্বের ১০০ মূল্যবান ব্র্যান্ডের অর্ধেকেরও বেশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত, যাদের সম্মিলিত ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ প্রায় ৩.২ ট্রিলিয়ন ডলার। ‘ব্র্যান্ড ফিন্যান্স’ ওই প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘ব্র্যান্ড ফিন্যান্স গ্লোবাল ১০০’-এর মধ্যে স্থান পেয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জার্মানি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সৌদি আরব, আয়ারল্যান্ড, ভারত, তাইওয়ান, সুইজারল্যান্ড এবং কানাডার কোম্পানি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান ১০ ব্র্যান্ডের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আছে ছয়টি ব্র্যান্ড, চীনের আছে দুটি ব্র্যান্ড, জার্মানির এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ব্র্যান্ড আছে একটি করে। এমনকি বিশ্বসেরা ১০০ গ্লোবাল ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের ব্র্যান্ডগুলোর আধিপত্য বেশি দেখা গেছে।
তথ্যসূত্র : ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট
অ্যাপল
ক্যালিফোর্নিয়া, আমেরিকা
অ্যাপল ইনকরপোরেটেড; আমেরিকার বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি। বিশ্বসেরা ব্র্যান্ডের তালিকায় সবার ওপরে অ্যাপল। ২০২৪ সালেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। তবে আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় পাঁচ টেক কোম্পানির মধ্যে এর অবস্থান তৃতীয়। বিখ্যাত কোম্পানিটির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৫১৬.৬ বিলিয়ন ডলার। গতবারের তুলনায় অ্যাপলের ব্র্যান্ড মূল্য প্রায় ৭৩.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমেরিকার এই মাল্টিন্যাশনাল টেকনোলজি কোম্পানি কম্পিউটার এবং মোবাইলের মতো পণ্য তৈরি করে থাকে। অ্যাপল মূলত আইফোন, আইপ্যাড এবং ম্যাক কম্পিউটারের মতো উদ্ভাবনী পণ্যগুলোর জন্য পরিচিত। সম্প্রতি কোম্পানিটি M3 চিপ-সহ নতুন ম্যাকবুক, এয়ারপড-সহ নিত্যনতুন মডেল প্রস্তুত এবং পণ্যগুলোর গুণগত মানের দিকে জোর দেয়।
মাইক্রোসফট
ওয়াশিংটন, আমেরিকা
মাইক্রোসফট করপোরেশন হলো আমেরিকার আরেকটি বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি। মাইক্রোসফট-এর বিখ্যাত ‘উইন্ডোজ’ অপারেটিং সিস্টেম সমগ্র বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা সফটওয়্যার। এরা মূলত সফটওয়্যার, ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস, কম্পিউটার এবং এর আনুষঙ্গিক পণ্যসামগ্রী তৈরি করে থাকে। গত বছরের তুলনায় মাইক্রোসফটের ব্র্যান্ড মূল্য প্রায় ৭৭.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে, ব্র্যান্ডের বাজার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৩৪০.৪ বিলিয়ন ডলার। ধনকুবের বিল গেটস এই সফ্টওয়্যার পরিষেবা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা। সম্প্রতি মাইক্রোসফট কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) যুক্ত করেছে। পাশাপাশি প্রযুক্তি সংস্থাটি তাদের ব্যবসায় Azure এবং Microsoft 365-এর মতো পরিষেবাগুলো সম্প্রসারণ করার কারণে তাদের বাজার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
গুগল
ক্যালিফোর্নিয়া, আমেরিকা
গুগল এলএলসি (Google LLC); আমেরিকার আরেকটি বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি। যারা মূলত ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা এবং এর আনুষঙ্গিক পণ্যসামগ্রী সরবরাহ করে থাকে। সারা বিশ্বের মানুষই এদের গ্রাহক। গুগলের বর্তমান বাজার মূল্য আনুমানিক ৩৩৩.৪ বিলিয়ন ডলার। গতবারের তুলনায় সংস্থাটির ব্র্যান্ড মূল্য প্রায় ১৮.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের সিংহভাগ আয়ের উৎস হলো- অনলাইন বিজ্ঞাপন। গুগল এলএলসি সাধারণত সার্চ ইঞ্জিন, অনলাইন বিজ্ঞাপন, ক্লাউড পরিষেবা এবং এ-সংক্রান্ত পণ্যগুলোর জন্য পরিচিত। ২০২৪ সালে, প্রযুক্তি কোম্পানিটি Google AI এবং তৃতীয় পক্ষের কুকির ফেজআউটের ওপর জোর দিয়েছে। করোনা মহামারির পর মানুষজন অনলাইনে আরও বেশি সময় ব্যয় করছে।
অ্যামাজন
ওয়াশিংটন, আমেরিকা
অ্যামাজন; আমেরিকার বৃহত্তম ইন্টারনেট ভিত্তিক খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান। যারা মূলত ইন্টারনেটের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি এবং সরবরাহের কাজ করে থাকে। এরা বিশ্বের বৃহত্তম অনলাইন খুচরা বিক্রেতা, পণ্য এবং পরিষেবাগুলোর জন্য পরিচিত। অ্যামাজনের ব্র্যান্ড মূল্য মাত্র ৩.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে, বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ৩০৮.৯ বিলিয়ন ডলার। করোনা মহামারির পর অ্যামাজনের জনপ্রিয়তা দারুণভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনার সংকটের (লকডাউন) সময় উন্নত দেশগুলোর সিংহভাগ মানুষ অ্যামাজনের ডেলিভারির ওপর নির্ভরশীল ছিল। তখন থেকে ই-কমার্স ভিত্তিক ডেলিভারি ব্যবসার জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। অ্যামাজন গ্রাহক-সন্তুষ্টি, গ্রাহকের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ক্রমাগত উদ্ভাবনের ওপর নজর রেখে এগিয়ে যাচ্ছে।
স্যামসাং গ্রুপ
সুওন-সি, দক্ষিণ কোরিয়া
স্যামসাং গ্রুপ দক্ষিণ কোরীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। ১৯৩৮ সাল থেকে সারা বিশ্বে এদের ব্যবসা ছড়িয়েছে। স্যামসাং গ্রুপ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা করে থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স। যারা মূলত সারা বিশ্বে ইলেকট্রনিক্স পণ্যসামগ্রী সরবরাহ করে। দক্ষিণ কোরীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি মূলত স্মার্টফোন (মোবাইল) এবং ইলেকট্রনিক পণ্যের জন্য পরিচিত। পাশাপাশি জাহাজ নির্মাণ এবং স্থাপত্য নির্মাণ শিল্প-সহ আরও অনেক কিছুতে শক্তিশালী উপস্থিতি রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার এই বহুজাতিক সংস্থার। ব্র্যান্ড মূল্য ০.৩ শতাংশ হ্রাস সত্ত্বেও স্যামসাংয়ের বাজার মূল্য প্রায় ৯৯.৪ বিলিয়ন ডলার। তাদের Samsung Galaxy S24 সিরিজ ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। ২০২৪ সালে স্মার্টফোন বিক্রিতে তারা শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে।
টিকটক
ক্যালিফোর্নিয়া
টিকটক, যা চীনে দৌয়িন নামে পরিচিত। এটি মূলত ছোট ভিডিও তৈরি এবং শেয়ার করার জন্য একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। যা তরুণ দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আক্ষরিক অর্থে টিকটক হলো- ‘কণ্ঠ মিলিয়ে শর্ট ভিডিও’ তৈরির অ্যাপ্লিকেশন। পাশাপাশি এটি হলো সংগীত ভিডিও প্ল্যাটফর্ম এবং সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। সংস্থাটি নিজেদের বিশ্বের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান অ্যাপ্লিকেশন হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। চীনা এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের বাজার মূল্য প্রায় ৮৪.২ বিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের তুলনায় ২৮.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চীনের জনপ্রিয় এই সোশ্যাল মিডিয়ার আয়ের উৎস হলো- অ্যাপ-মধ্যস্থ অনলাইন ভিত্তিক কেনাকাটা, পণ্যসামগ্রীর বিজ্ঞাপন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য।
ফেসবুক
ক্যালিফোর্নিয়া
ফেসবুক, মেটা প্ল্যাটফর্মের মালিকানা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এরা সারা বিশ্বের মানুষকে একটি প্ল্যাটফর্মে এনেছে। যেখানে মানুষ তাদের মনের ভাব প্রকাশ করে। পাশাপাশি যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার করে থাকে। গুগলের মতোই বিজ্ঞাপন তাদের আয়ের প্রধান উৎস। আপাতদৃষ্টিতে ফেসবুক ফ্রি হলেও ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বিজ্ঞাপন দেখায় এবং বিনিময়ে বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে অর্থ নেয়। ২০২৪ সালে ব্র্যান্ড ভ্যালুর দিক থেকে ফেসবুকের ২৮.৪ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার পর তাদের বর্তমান বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৫.৭ বিলিয়ন ডলার। সম্প্রতি ফেসবুক সামাজিক উদ্ভাবনে বেশি নজর দিয়েছে। পাশাপাশি সহজে আইডি অ্যাক্সেস এবং রিয়েল আইডির দিকে ঝুঁকছে।
ওয়ালমার্ট
আরকানসাস
ওয়ালমার্ট, আমেরিকার পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। এরা পৃথিবীর নানা দেশে দোকান পরিচালনা করে। আমেরিকার ওয়ালমার্ট আয়ের দিক থেকে তো বটেই, বিশ্বের সর্ববৃহৎ খুচরা বিক্রেতার তকমাও পেয়েছে। সংস্থাটি মূলত কম দামে বিভিন্ন ধরনের পণ্য অফার করে থাকে। এ কারণে ওয়ালমার্ট সুপারসেন্টার হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। ওয়ালমার্টের ব্র্যান্ড মূল্য ১৪.৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এদের বাজার মূল্য প্রায় ৯৬.৮ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ বিগত বছরগুলোর তুলনায় ওয়ালমার্টের বাজার মূল্য কমেছে। ওয়ালমার্ট খুচরা বিক্রিতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরতা বাড়িয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকদের ভালো অভিজ্ঞতার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) টুল চালু করেছে। ১৯৬২ সালে পারিবারিক স্টোর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা সংস্থাটি আজকের বিশ্বে সেরা চেইনশপ।