শিরোনাম
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৬:০১

পেঁপে চাষে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন কৃষকের

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর:

পেঁপে চাষে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন কৃষকের

উন্নত জাতের দেশীয় প্রজাতির ভেজসগুণ সম্পন্ন পেঁপে চাষ করে ব্যাপক ফলন ও লাভবান হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে দিনাজপুরের বিভিন্ন স্থানে পেঁপে চাষ শুরু হয়েছে। আর আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁপে চাষ করলে দ্বিগুণ ফলনসহ অনয়াসে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। 

এ রকম দেশীয় উন্নত কাশিমপুরি জাতের পেঁপে চাষ করে সবার দৃষ্টি কেড়েছে দিনাজপুরের বীরগঞ্জের আব্দুল্লাহ হেল কাফী। গাছে বড় বড় পেঁপের ফলন দেখে অনেকেই দেখতে ছুটছেন তার বাগানে এবং পেঁপে চাষের আগ্রহী হচ্ছেন। দেড় বছর আগে গাছের চারা লাগিয়েছেন তিনি। 

বাগানের প্রবেশের পর প্রতিটি পেঁপে গাছেই ঝুলছে বড় বড় পেঁপে। কোন কোন গাছে এত বেশি পেঁপে, যে গাছের কান্ডই ভেঙে পড়ার উপক্রম। তাই বাঁশ দিয়ে ঠেস দিতে হয়েছে। গাছের গোড়া থেকে উপরিভাগ পর্যন্ত শুধুই পেঁপে। প্রতিটি গাছে কমপক্ষে ২৫-৩৫ কেজি পেঁপে রয়েছে। কোনটি পেঁপের ওজন প্রায় ৫ কেজির বেশি হতে পারে। বাগানে কাশিমপুরিসহ বাউ-৩ ও বাউ-৪ জাতের প্রায় ২শতাধিক গাছ রয়েছে। বর্তমানে প্রতি মণ পাইকারিতে পেঁপে ৬শ থেকে ৭শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যে কেউ বাণিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষ করে সহজেই লাখপতি হতে পারবেন। পেঁপে স্বল্প মেয়াদি ফল এর চাষের জন্য বেশি জায়গারও প্রয়োজন হয় না। বাড়ির আঙ্গিনায় দু’চারটি গাছ লাগালে তা থেকে সারা বছর সবজি ও ফল পাওয়া যায়। 
পেঁপে গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। তাই পেঁপে চাষের জন্য নির্বাচিত জমি হতে হবে জলাবদ্ধতামুক্ত এবং সেচ সুবিধাযুক্ত। জমি বারবার চাষ ও মই দিয়ে উত্তমরূপে তৈরি করতে হবে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য বেড পদ্ধতি অবলম্বন করা ভালো। উন্নত পদ্ধতিতে পেঁপে চাষ এ সফলতা পেতে বীজ বপন ও চারা রোপণের সময় হচ্ছে,- আশ্বিন এবং পৌষ মাস। 

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ হেল কাফী জানান, আমার বাগানে কাশিমপুরি পেঁপের চারা বিএডিসি থেকে এনেছি। পেঁপে গাছের খাদ্যের অভাব মেটাতে জৈব কিংবা কেচোঁ সার ব্যবহার করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়। তাছাড়া পেঁপের পরাগায়নসহ ভালো ফলন পাওয়ার জন্য কৃষকদের ১০:২ অনুপাতে পুরুষ গাছ রাখতে হবে। উন্নত পদ্ধতিতে পেঁপে চাষ করে সফলতা চাইলে অবশ্যই পরিচর্যার দিকে শতভাগ খেয়াল রাখতে হবে। পেঁপে চাষের জমি সব সময় আগাছামুক্ত রাখতে হবে। মাটিতে রসের অভাব হলে পানি সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।

বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু রেজা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, কৃষি বিভাগ উন্নত জাতের বাউ-৩, বাউ-৪, কাশিমপুরি জাতের পেঁপে চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। পেঁপে গাছকে বিভিন্ন রোগ (গাছের গোড়া পঁচা, পোকাবাহিত রোগ, ক্ষতিকারক ভাইরাস) থেকে মুক্ত রাখতে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়। জমিতে একবার স্থানীয় উন্নত কাশিমপুরি জাতের পেঁপের চারা লাগালে ৫ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। আবার প্রথম বছরের পর ক্ষেত পরিচর্যার খরচও কম লাগে এবং ফলনের পরিমানও বাড়তে থাকে। এসব প্রায় প্রতিটি গাছে ২৫-৩৫ কেজি পেঁপে ধরে। এর একেকটি পেঁপে প্রায় ৫ কেজির বেশি হতে পারে। 

বিডি প্রতিদিন/এএম

সর্বশেষ খবর