৪ অক্টোবর, ২০২২ ১৬:২০
নীলফামারী

আগাম আলু চাষে অভাব এখন অতীত

আবদুল বারী, নীলফামারী

আগাম আলু চাষে অভাব এখন অতীত

আগাম ধান, আগাম আলু চাষে নীলফামারীতে অভাব এখন অতীত। একসময় এ অঞ্চল  আশ্বিন-কার্তিক  অভাবের মাস নামে পরিচিত ছিল। এ অঞ্চলের মানুষ  চরম অভাবে দিনাতিপাত করতো। সেই দিন আর নেই। ফসলের বহুমুখীকরণ ও আগাম ফসল উৎপাদনে কৃষি বিপ্লবে কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। এ উপজেলার আগাম আলু ৫০-৫৫ দিনের মধ্যে বাজারে চলে আসবে।

কিশোরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আগাম আলু চাষ শুরু হয়েছে। সেভেন জাতের আগাম আলুর বীজ রোপণ করা হচ্ছে। যার আলু যত আগে উঠবে, সে তত বেশি লাভবান হবেন। শীত মৌসুমের শুরুতে নতুন আলুর বাজারমূল্য দ্বিগুণ পেয়ে লাভবান হবেন এমন প্রত্যাশা করছেন আলু চাষিরা।

উপজেলার উত্তর দুরাকুটি, নিতাই, মাগুড়া, পুটিমারী, কালিকাপুর এলাকায় আগাম ধানের কাটা-মাড়াই শেষে  জমিতে আগাম আলুর বীজ বুনছেন কৃষকেরা। চারিদিকে যেন ফসল উৎপাদনের উৎসব চলছে।

বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের কৃষক শামীম হোসেন বলেন,  গত মৌসুমে ৮ একর জমিতে আলু চাষ করে ৫০০ বস্তা আলু পেয়েছিলাম। এর মধ্যে মৌসুমের শুরুতেই ২০০ বস্তা বিক্রি করে ৩০০ বস্তা হিমাগারে রাখি। উৎপাদন খরচ ও হিমাগার ভাড়াসহ প্রতি বস্তায় (৮৪ কেজি) খরচ পড়ে ৯৫০ টাকা। সেই আলু বস্তা প্রতি বিক্রি করেছেন গড়ে ১ হাজার ৬০০ টাকা করে। লাভ বেশি হওয়ায় এবার তিনি ২৫ বিঘা জমিতে আলু লাগানো শুরু করেছেন।

কিশোরগঞ্জ উপজেলার কৃষক বকুল হোসেন বলেন, এবার ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আগাম আলু চাষে ব্যয় বেড়ে গেছে। গত বছরে যেখানে প্রতিবিঘা জমিতে আলু চাষ করতে খরচ হয়েছিল ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। সেখানে এ বছর ব্যয় হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।

মাগুরা ইউনিয়নের কৃষক সাবেদ আলী জানান, বিঘা প্রতি জমিতে আগাম জাতের আলু রোপণে খরচ হচ্ছে ১০ হাজার টাকা। আগাম বাজার ধরতে পারলে আলুর কেজি বিক্রি হবে প্রায় ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এতে বিঘা প্রতি আলু বিক্রি করে খরচ বাদ দিয়ে লাভ পাওয়া যাবে প্রায় ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা।

উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের পূর্ব দলিরাম গ্রামের কৃষি শ্রমিক শাহজাহান আলী জানান, আগে বেকার থাকতে হতো। তবে এখন আগাম উৎপাদিত ধান ও  আলু খেতে কাজ করে প্রতিদিন প্রায় ৪০০ টাকা মজুরি পাওয়া যাচ্ছে।

রণচন্ডি ইউনিয়নের কুটিপাড়া এলাকার কৃষক মোজাম্মেল হক বলেন, আমাদের এদিকের ডাঙ্গা জমিগুলো একদম উঁচু এবং বালুমিশ্রিত। তাই ভারি বৃষ্টিপাত হলেও তেমন ভয় থাকে না। ফলে  দ্বিগুণ লাভের আশায় আগাম আলু চাষ করছি।

কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, চলতি বছর ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১০০ হেক্টর বেশি। এ বছর আগাম আমন ধানে রেকর্ড পরিমাণ ফলন পাওয়া গেছে। কৃষকেরা এখন আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উঁচু জমিতে আলুচাষে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সেই সাথে নিচু জমিতে আবহাওয়া দেখে রোপণের কথা বলা হচ্ছে। 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর